আপনি পড়ছেন

ধনকুবের জেফরি এপস্টাইনের ৫০তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে তৈরি করা একটি অ্যালবামে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের লেখা একটি রসালো চিঠি পাওয়া গেছে। বৃহস্পতিবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এই চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে এসেছে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প

‘দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল’ পত্রিকার প্রতিবেদন অনুসারে, ২০০৩ সালে এপস্টাইনের দীর্ঘদিনের সহযোগী এবং দণ্ডিত শিশু যৌন পাচারকারী গিসলেইন ম্যাক্সওয়েল চামড়ায় বাঁধানো এই স্মারক অ্যালবামটি তৈরি করেছিলেন। এতে সাবেক ভিক্টোরিয়াস সিক্রেট প্রধান নির্বাহী লেসলি ওয়েক্সনার এবং ইজরায়েল-পন্থী আইনজীবী অ্যালান ডারশোউইটজের চিঠিও অন্তর্ভুক্ত ছিল।

ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের পর্যালোচনা অনুযায়ী, ট্রাম্পের এই কথিত চিঠির অশালীন প্রকৃতি সংগ্রহের অন্য বেশ কয়েকটি চিঠির মতোই। পত্রিকাটি জানিয়েছে, চিঠির মূল লেখাটি টাইপ করা, যা একজন নগ্ন নারীর হাতে আঁকা প্রতিকৃতির মাঝে স্থাপন করা হয়েছে। প্রতিকৃতিতে নারীর কটিদেশের নিচে ‘ডোনাল্ড’ নামটি এমনভাবে লেখা যা কুরুচিপূর্ণ ইঙ্গিত বহন করে।

চিঠিটির বক্তব্য একটি চলচ্চিত্র বা টেলিভিশন নাটকের সংলাপের আকারে সাজানো, যেখানে এপস্টাইন ও ট্রাম্পের মধ্যে কথোপকথন তুলে ধরা হয়েছে।

এর শুরুটা এমন:

নেপথ্য কণ্ঠ: জীবনে সবকিছু পাওয়ার চেয়েও নিশ্চয়ই আরও কিছু আছে।’

ডোনাল্ড: হ্যাঁ, আছে, কিন্তু আমি তোমাকে বলব না সেটা কী।’

জেফরি: আমিও বলব না, কারণ আমিও জানি সেটা কী।’

ডোনাল্ড: জেফরি, আমাদের মধ্যে কিছু বিষয়ে মিল আছে।’

জেফরি: হ্যাঁ, ভেবে দেখলে তাই মনে হয়।’

ডোনাল্ড: তুমি কি লক্ষ্য করেছ, হেঁয়ালিরা কখনও বুড়িয়ে যায় না?’

জেফরি: সত্যি বলতে, শেষবার যখন তোমাকে দেখেছিলাম, তখনই বিষয়টা আমার কাছে স্পষ্ট হয়েছিল।’

ডোনাল্ড: একজন বন্ধু একটা দারুণ জিনিস। শুভ জন্মদিন—আর প্রতিটি দিনই হোক আরেকটি চমৎকার রহস্য।’

চিঠিতে উল্লেখিত সেই ‘রহস্য’ কী, তা স্পষ্ট নয়। তবে জার্নাল জানিয়েছে, নব্বইয়ের দশক থেকে ২০০০-এর দশকের শুরু পর্যন্ত ট্রাম্প ও এপস্টাইন বন্ধু ছিলেন। বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে তাদের একসঙ্গে ছবিও তোলা হয়েছে, যার মধ্যে মেলানিয়া ট্রাম্প এবং এপস্টাইনের তৎকালীন প্রেমিকা ম্যাক্সওয়েলের সঙ্গে তোলা ছবিও রয়েছে। পত্রিকাটি আরও জানায়, সাবেক প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনের পাশাপাশি ট্রাম্পের নামও এপস্টাইনের ব্যক্তিগত উড়োজাহাজের ভ্রমণ তালিকায় ছিল।

২০০২ সালে ‘নিউইয়র্ক ম্যাগাজিন’-এ এপস্টাইনকে নিয়ে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে ট্রাম্পের একটি উদ্ধৃতি উল্লেখ করা হয়। সেখানে তিনি বলেছিলেন, ‘আমি জেফকে ১৫ বছর ধরে চিনি। দারুণ মানুষ। সে খুবই আমুদে একজন। এমনকি এমনও বলা হয় যে, সে আমার মতোই সুন্দরী নারীদের পছন্দ করে, যাদের অনেকেই বেশ কম বয়সী। এতে কোনো সন্দেহ নেই—জেফরি তার সামাজিক জীবন উপভোগ করে।’

এই বিস্ফোরক প্রতিবেদনটি এমন এক সময়ে সামনে এল, যখন এপস্টাইন ফাইলস বা সরকারি নথি সংগ্রহ নিয়ে ট্রাম্প এক ঝড়ো পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছেন। এই নথিগুলো প্রকাশ করতে ট্রাম্পের বিচার বিভাগ এখন পর্যন্ত অস্বীকৃতি জানিয়েছে, যা প্রেসিডেন্টের ‘মেগা’ আন্দোলনের সমর্থকদের মধ্যে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় বিভেদ তৈরি করেছে।

গত সপ্তাহে বিচার বিভাগ ঘোষণা করে যে, ২০১৯ সালে এপস্টাইন আত্মহত্যা করেছেন এবং তার কোনো ‘মক্কেল তালিকা’ ছিল না। এই ঘোষণা মেগা সমর্থকদের মধ্যে অসন্তোষের জন্ম দিয়েছে।

ট্রাম্প এপস্টাইন কেলেঙ্কারিকে একটি ‘ধাপ্পাবাজি’ বলে অভিহিত করেছেন এবং সমর্থকদের এই বিষয়টি থেকে সরে আসতে বলেছেন। যদিও তার সমর্থকেরা ক্রমাগত সেই নথিগুলো প্রকাশের জন্য সোচ্চার, যার মধ্যে সেই ‘মক্কেল তালিকা’ও রয়েছে, যা সম্পর্কে অ্যাটর্নি জেনারেল পাম বন্ডি ফেব্রুয়ারিতে বলেছিলেন, ‘তালিকাটি এই মুহূর্তে আমার টেবিলেই রাখা আছে।’

অনেকের ধারণা, এই তালিকায় ধনী ও ক্ষমতাবান মহলের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের নাম রয়েছে। প্রযুক্তি জগতের শতকোটিপতি এবং ট্রাম্পের সাবেক মিত্র ইলন মাস্ক ইঙ্গিত দিয়েছেন যে, প্রেসিডেন্টের নামও ‘এপস্টাইন ফাইলস’-এ থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।

এদিকে ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে ট্রাম্প তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তবে তিনি এও জানিয়েছেন যে, তিনি অ্যাটর্নি জেনারেল পাম বন্ডিকে ‘আদালতের অনুমোদন সাপেক্ষে প্রাসঙ্গিক সব জবানবন্দি পেশ করার’ নির্দেশ দিয়েছেন। যদিও এই ঘোষণায় এপস্টাইন সংক্রান্ত তদন্তে সংগৃহীত কোনো সরকারি প্রমাণ প্রকাশের কথা বলা হয়নি।

ট্রাম্প সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেছেন, ‘ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল এবং রুপার্ট মারডককে ব্যক্তিগতভাবে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড জে. ট্রাম্প সরাসরি সতর্ক করেছিলেন যে, এপস্টাইনকে লেখা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের যে কথিত চিঠি তারা ছেপেছে, তা একটি জাল এবং এটি ছাপা হলে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে। জনাব মারডক বিষয়টি দেখবেন বলে জানিয়েছিলেন, কিন্তু স্পষ্টতই তার সেই ক্ষমতা ছিল না।’

তিনি আরও যোগ করেন, ‘সংবাদমাধ্যমকে সত্যবাদী হতে শিখতে হবে এবং এমন উৎসের ওপর নির্ভর করা যাবে না, যার সম্ভবত কোনো অস্তিত্বই নেই। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ইতোমধ্যে জর্জ স্টেফানোপোলাস/এবিসি, সিক্সটি মিনিটস/সিবিএস এবং অন্যান্যদের পরাজিত করেছেন এবং একসময়ের সেরা পত্রিকা ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের বিরুদ্ধে মামলা করতে ও তাদের জবাবদিহির আওতায় আনতে মুখিয়ে আছেন। এটি সত্যিই একটি ‘জঘন্য ও নোংরা ন্যাকড়া’য় পরিণত হয়েছে।’

গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...

খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর

Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.

Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.