চকরিয়ায় এনসিপির মঞ্চ ভাঙচুর-গাড়িবহর আটকে দেওয়ার অভিযোগ

কক্সবাজারের চকরিয়ায় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) পথসভা মঞ্চ ভাঙচুর করেছেন বিএনপি ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা এমন অভিযোগ করেছে এনসিপি। শনিবার (১৯ জুলাই) বিকেল পৌনে ৪টার দিকে চকরিয়া পৌর শহরের জনতা শপিং সেন্টার চত্বরে এ ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিকেলে একটি ট্রাকের ওপর স্থাপিত মঞ্চে সমাবেশ করার প্রস্তুতি নিচ্ছিল এনসিপি। এর মধ্যেই লাঠিসোটা হাতে একদল লোক এসে মঞ্চ ভাঙচুর করে, মাইকিং থামিয়ে দেয় এবং এনসিপির লোকজনকে সরিয়ে দেয়। এরপর সেনাবাহিনী ও পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং হামলাকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।

এনসিপির পক্ষ থেকে জানানো হয়, বিকেল পাঁচটার দিকে দলের আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামসহ কেন্দ্রীয় নেতাদের উপস্থিত থাকার কথা ছিল। তবে তার আগেই বিএনপি-ছাত্রদলের নেতারা হামলা চালিয়ে সমাবেশ বানচাল করে দেয়।

অন্যদিকে, চকরিয়ায় বিএনপির লোকজন এনসিপির গাড়িবহর আটকে রেখেছেন বলে অভিযোগ করা হয়। শনিবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে ফেইসবুকে দেওয়া এক পোস্টে দলটির সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসউদ অভিযোগ করেন।

ফেসবুকে হান্নান মাসউদ লিখেছেন, “চকরিয়ায় জাতীয় নাগরিক পার্টির গাড়িবহর আটকে রেখেছে বিএনপির লোকজন। তারা গাড়িবহর আটকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্যের নামে স্লোগান দিচ্ছেন। লোহাগড়ায় ব্যানার-ফেস্টুন ছিঁড়ে ফেলেছে। যেমন লীগ গত ১৬ বছর ধরে করছে, ঠিক তেমনি আপনারাও করছেন। তাদের পরিণতি দেখে যদি শিক্ষা না নিতে পারেন, তাহলে সেইম পরিণতির জন্য আপনারাও অপেক্ষা করুন।”

এর আগে দুপুরে কক্সবাজার শহরের এক সমাবেশে এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটোয়ারী বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদকে ‘নব্য গডফাদার' বলে মন্তব্য করেন।

তার ভাষ্য ছিল, “আগে নারায়ণগঞ্জে গডফাদার ছিল শামীম ওসমান, এখন কক্সবাজারে শুনছি শিলং থেকে একজন এসেছেন। ঘের দখল, জায়গা দখল, চাঁদাবাজি—সবই করছেন। আবার বলেন সংস্কার বোঝেন না। কক্সবাজারবাসী তাদের রাজপথেই জবাব দেবে।”

এই বক্তব্যে বিএনপি-ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়। তারা চকরিয়াসহ কক্সবাজারে প্রতিবাদে নামে। বিকেল থেকে চকরিয়া মহাসড়কে মিছিল, স্লোগান শুরু করে তারা। এরপরই এনসিপির সমাবেশস্থলে হামলা হয়।

এনসিপির চকরিয়া উপজেলা সংগঠক খাইরুল বাশার বলেন, “ছাত্রদল ও বিএনপির নেতা-কর্মীরা আমাদের মঞ্চ ভেঙে ফেলেছে, ব্যানার ছিঁড়েছে, ট্রাকের কাচ ভেঙেছে। পরে তারা সমাবেশস্থল দখল করে নিজেদের স্লোগান দিতে থাকে।”

এ বিষয়ে চকরিয়া থানার ওসি মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, “সংঘর্ষ এড়াতে পুলিশ ও সেনাবাহিনী সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। মঞ্চ ভাঙচুরের তথ্য এখনো আমাদের কাছে আসেনি।”