ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী: শারার ওপর আস্থা নেই, শুধু সৃষ্টিকর্তা ও সেনাবাহিনীকে বিশ্বাস করি

সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আহমাদ আল-শারার ওপর আস্থা নেই’ বলে মন্তব্য করেছেন ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ। স্থানীয় গণমাধ্যম শনিবার এ খবর জানিয়েছে। ওয়াশিংটনে মার্কিন সিনেটর টেড ক্রুজের সঙ্গে এক বৈঠকে কাৎজ দাবি করেন, শারা ভবিষ্যতে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ‘জিহাদি গোষ্ঠীগুলোকে’ ব্যবহার করবেন।

জেরুজালেম পোস্ট কর্তৃক প্রকাশিত প্রতিবেদনে কাৎজের মন্তব্য উদ্ধৃত করে বলা হয়, ‘ইসরায়েল রাষ্ট্রকে রক্ষা করার জন্য আমরা কেবল সৃষ্টিকর্তা এবং আইডিএফের (ইসরায়েলি সেনাবাহিনী) ওপরই আস্থা রাখি।’

গত ডিসেম্বরে সিরিয়ায় অবসান ঘটা ৬১ বছরের বাথ শাসনের প্রধান শাসকদের কথা উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘আমি বাবা (হাফেজ) আসাদকে বিশ্বাস করতাম না, ছেলে (বাশার) আসাদকেও না। আর শারার মতো একজন নেতার ওপর তো আস্থা রাখার প্রশ্নই ওঠে না, যিনি সিরিয়ার সংখ্যালঘু, যেমন এখনকার দ্রুজদের বিরুদ্ধে জিহাদি গোষ্ঠীগুলোকে ব্যবহার করছেন এবং আগামীকাল তিনি গোলান মালভূমিতে ইসরায়েলি বসতির বিরুদ্ধেও তাদের ব্যবহার করতে পারেন।’

উল্লেখ্য, ইসরায়েল ১৯৬৭ সাল থেকে সিরিয়ার গোলান মালভূমি অবৈধভাবে দখল করে রেখেছে।

এদিকে, শনিবার দক্ষিণাঞ্চলীয় প্রদেশ সুয়েদাতে কয়েক দিনের অস্থিরতার পর সিরিয়ার রাষ্ট্রপতি দপ্তর একটি ব্যাপক ও অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দিয়েছে। গত ১৩ জুলাই সুয়েদাতে বেদুইন আরব উপজাতি এবং সশস্ত্র দ্রুজ গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। সহিংসতার মাত্রা বাড়লে ইসরায়েল বিমান হামলা চালায়, যার মধ্যে দামেস্কের সিরীয় সামরিক অবস্থান ও অবকাঠামোর ওপর হামলাও অন্তর্ভুক্ত ছিল। ইসরায়েল তাদের এই হামলার অজুহাত হিসেবে দ্রুজ সম্প্রদায়কে রক্ষা করার প্রয়োজনের কথা উল্লেখ করে। তবে, সিরিয়ার অধিকাংশ দ্রুজ নেতা প্রকাশ্যে যেকোনো বিদেশি হস্তক্ষেপ প্রত্যাখ্যান করেছেন এবং একটি ঐক্যবদ্ধ সিরীয় রাষ্ট্রের প্রতি তাদের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছেন।

২০২৪ সালের ডিসেম্বরে বাশার আসাদের শাসনের পতনের পর ইসরায়েল সিরিয়ায় তার বিমান হামলা জোরদার করে এবং দুই দেশের মধ্যবর্তী অন্তর্বর্তীকালীন অঞ্চল ও ১৯৭৪ সালের বিচ্ছেদ চুক্তিকে অকার্যকর বলে ঘোষণা করে। প্রায় ২৫ বছর ধরে সিরিয়ার নেতা থাকা বাশার আসাদ ডিসেম্বরে রাশিয়ায় পালিয়ে যান, যার মাধ্যমে ১৯৬৩ সাল থেকে ক্ষমতায় থাকা বাথ পার্টির শাসনের অবসান ঘটে। জানুয়ারিতে শারার নেতৃত্বে সিরিয়ায় একটি নতুন অন্তর্বর্তীকালীন প্রশাসন গঠিত হয়।