সালাহউদ্দিন: দলীয় প্রধানকে প্রধানমন্ত্রী হতে না দেওয়া সংসদীয় রীতির পরিপন্থী

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, শুধুমাত্র দলীয় প্রধান হওয়ার কারণে কেউ প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না—এমন বিধান গণতন্ত্রবিরোধী এবং সংসদীয় ব্যবস্থার পরিপন্থী।

শনিবার (২০ জুলাই) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর এক বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী হওয়ার ক্ষেত্রে দলীয় প্রধানের জন্য অপশন খোলা থাকা উচিত। কারণ, এটা তার গণতান্ত্রিক অধিকার। পার্লামেন্টারি পার্টি যদি কাউকে মনোনয়ন দিতে চায়, সেটা দলের প্রধান হতে পারে, আবার অন্য কেউও হতে পারে। কিন্তু সেই সুযোগটা রাখা জরুরি।

সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, বৈঠকে মূলত দুটি বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে—তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠা এবং প্রধানমন্ত্রী, লিডার অব দ্য হাউজ ও দলীয় প্রধান—এই তিনটি পদ একজন ব্যক্তি একযোগে পালন করতে পারবেন কি না।

তিনি বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল হলেও বিষয়টি এখনো আপিল বিভাগের রিভিউ পর্যায়ে বিচারাধীন। বিএনপি আশা করে, আদালতের রায়ের মাধ্যমেই এ ব্যবস্থা আবার চালু হবে। তবে রায় অনুকূলে না এলে সংসদ নতুন আইন করে এ পদ্ধতি ফিরিয়ে আনতে পারে।

বিএনপির এই নেতার বলেন, বিএনপিসহ একাধিক রাজনৈতিক দল তত্ত্বাবধায়ক সরকারের জন্য বিকল্প প্রস্তাব দিয়েছে, যার আলোকে কমিশন একটি খসড়া তৈরি করেছে। দলীয়ভাবে আলোচনা করে মঙ্গলবারের মধ্যে মতামত জানাতে বলা হয়েছে।

সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বাছাইয়ে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠনের প্রস্তাব এসেছে। এতে প্রধানমন্ত্রী, বিরোধীদলীয় নেতা, তৃতীয় বৃহত্তম দলের একজন প্রতিনিধি এবং আরও দু’জন নিরপেক্ষ সদস্য থাকার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, এই কমিটি বিভিন্ন পক্ষের কাছ থেকে নাম আহ্বান করবে, শর্টলিস্ট করবে এবং প্রয়োজনে র‍্যাংকড চয়েস ভোটিংয়ের মাধ্যমেও সিদ্ধান্ত নেবে।

সালাহউদ্দিন বলেন, প্রস্তাবি ব্যবস্থায় নির্বাচনের জন্য ৯০ দিন সময় থাকবে, আর জরুরি প্রয়োজনে আরও ৩০ দিন বাড়ানোর সুযোগ থাকবে। প্রধান উপদেষ্টার ক্ষমতা প্রধানমন্ত্রীর সমপর্যায়ের হলেও তা শুধু রুটিন দায়িত্বে সীমাবদ্ধ থাকবে।

তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, যুক্তরাজ্যেও দলের প্রধানরাই সাধারণত প্রধানমন্ত্রী হন। তবে সেটা দলীয় সংসদীয় সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করে। কেউ যদি দলের প্রধান হন, তাকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে অযোগ্য ঘোষণা করা সংবিধান ও গণতন্ত্রবিরোধী চিন্তাধারা।

তিনি আরও বলেন, বিচার বিভাগকে রাজনৈতিক বিতর্কের বাইরে রাখতে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মোটামুটি ঐকমত্য তৈরি হয়েছে।