ফখরুল: সংস্কার নিয়ে দায় চাপানো হচ্ছে রাজনৈতিক দলগুলোর ওপর

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করেছেন, বর্তমান সরকার সংস্কার নিয়ে কথা বললেও রাজনৈতিক দলগুলোকে দায়ী করে তাদের ব্যর্থতা আড়াল করতে চাইছে। সোমবার (২৮ জুলাই) রাজধানীর জাতীয় জাদুঘরের সামনে যুবদল আয়োজিত মাসব্যাপী দেয়াল লিখন কর্মসূচির উদ্বোধনকালে তিনি এ কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, এই সরকার এখন প্রতি মুহূর্তে সংস্কার নিয়ে কথা বলছে। কিন্তু তারা কথার ফাঁকে ফাঁকে আমাদের মতো রাজনৈতিক দলগুলোর ওপর দোষ চাপানোর চেষ্টা করছে, যেন আমরা সহযোগিতা করছি না। অথচ সত্য হলো, আমরা সব সময়ই জাতীয় সংকট নিরসনে সহযোগিতার মানসিকতা রাখি।

তিনি বলেন, আমরা বরাবরই সংস্কারের পক্ষে ছিলাম এবং আছি। কিন্তু তারা যেভাবে বলছে, তা সত্য নয়। তারা প্রকৃতপক্ষে ব্যর্থতা আড়াল করতে আমাদের ওপর দায় দিচ্ছে।

গত বছরের জুলাই মাসে সংঘটিত ছাত্র গণআন্দোলনের এক বছর পার হলেও এখন পর্যন্ত কোনো বিচার প্রক্রিয়া শুরু না হওয়ায় প্রশ্ন তোলেন বিএনপি মহাসচিব।

তিনি বলেন, আজ এক বছর হয়ে গেলেও শেখ হাসিনার বিচার প্রক্রিয়া শুরু হলো না কেন? কিসের জন্য এত দেরি?

তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, গণতান্ত্রিক শক্তিগুলোর মধ্যে যদি বিভাজন তৈরি হয়, তাহলে ফ্যাসিস্ট শক্তিগুলো ফের মাথাচাড়া দিতে পারে। সেই সুযোগ তারা খুঁজছে।

সরকার পতনের আগের সময়ের কথা স্মরণ করে মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের নেতাকর্মীদের হত্যা, গুম, নির্যাতন ও দমন-পীড়নের শিকার হতে হয়েছে। বিশেষ করে গত বছরের জুলাইয়ে আমাদের অঙ্গসংগঠনের নেতাদের ডিবি কার্যালয়ে ধরে নিয়ে নির্মম নির্যাতন চালানো হয়। কিন্তু আমাদের কেউ আত্মসমর্পণ করেনি, কেউ মুচলেকা দেয়নি।

তিনি বলেন, আজ যে ছবি ছড়িয়েছে—নখ তুলে ফেলা হয়েছে, হাত ভেঙে দেওয়া হয়েছে, ঝুলিয়ে পেটানো হয়েছে—এইসব ছবি কিন্তু মিডিয়ায় আসছে না। অথচ এসব সত্য।

মিডিয়ার প্রতি আহ্বান জানিয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, সাদা-কালো স্পষ্ট করে দিন। কে কী অবদান রেখেছে, তা স্পষ্টভাবে বলুন।

তিনি দাবি করে বলেন, গত বছরের জুলাই আন্দোলনে যুবদলের ৭৯ জন এবং ছাত্রদলের ১৪২ জন কর্মী নিহত হয়েছেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, ওই দিন শুধু ছাত্ররা নয়—শিশু থেকে বৃদ্ধ পর্যন্ত সবাই রাজপথে নেমেছিলেন। এটা ছিল পুরো জাতির ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ।

বক্তব্যের শেষ দিকে তিনি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার অবদানের কথা স্মরণ করিয়ে বলেন, তিনি গণতন্ত্রের জন্য জীবনের সব কিছু ত্যাগ করেছেন। জনগণ যেন তা ভুলে না যায়।