রাষ্ট্র সংস্কারের পথে শেষ ধাপ: জুলাই সনদের ভাগ্য নির্ধারণী বৈঠকে ৩০ দল

বহুল আকাঙ্ক্ষিত ‘জুলাই সনদ’ প্রণয়নের লক্ষ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সব ধরনের আলোচনা আজই শেষ করতে চায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। রাষ্ট্র সংস্কারের বিভিন্ন অমীমাংসিত ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছাতে এটিই হতে যাচ্ছে দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনার শেষ দিন।

আজ সকাল সাড়ে এগারোটায় শুরু হওয়া এই বৈঠকে রাষ্ট্রের কাঠামো পরিবর্তনে সবচেয়ে জটিল বিষয়গুলো স্থান পেয়েছে। আলোচ্যসূচির মধ্যে রয়েছে—সংসদের উচ্চকক্ষ গঠন ও তার নির্বাচন পদ্ধতি, রাষ্ট্রের মূলনীতি নির্ধারণ, সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি), দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), মহাহিসাব নিরীক্ষক এবং ন্যায়পাল পদের নিয়োগ প্রক্রিয়া। এছাড়া, নাগরিকদের মৌলিক অধিকার আরও সম্প্রসারিত করার বিষয়টিও আজকের আলোচনার কেন্দ্রে রয়েছে।

বৈঠকের শুরুতে কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ স্পষ্ট জানিয়ে দেন, ‘আজকের মধ্যেই অমীমাংসিত বিষয়গুলো নিষ্পত্তির মাধ্যমে দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনা শেষ করা হবে’। তিনি আশা প্রকাশ করেন, দলগুলোর পারস্পরিক আলোচনার মাধ্যমেই একটি সমাধান বেরিয়ে আসবে।

এই গুরুত্বপূর্ণ আলোচনায় দেশের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর প্রায় সবাই অংশগ্রহণ করেছে। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), গণঅধিকার পরিষদ, গণসংহতি, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি এবং আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টিসহ মোট ৩০টি দলের প্রতিনিধিরা এতে উপস্থিত রয়েছেন।

অধ্যাপক আলী রীয়াজ জানান, আজকের আলোচনা শেষে সনদের একটি চূড়ান্ত খসড়া তৈরি করে দলগুলোর কাছে পাঠানো হবে। তাদের দেওয়া মতামতের ভিত্তিতেই সনদটি চূড়ান্ত করা হবে এবং স্বাক্ষরের জন্য উপস্থাপন করা হবে। ইতোমধ্যে ‘জুলাই সনদের পটভূমি’ শিরোনামে একটি খসড়া দলগুলোকে দেওয়া হয়েছে এবং তাদের প্রস্তাবিত সংশোধনী নিয়ে কমিশন কাজ করছে।

উল্লেখ্য, রাষ্ট্র সংস্কার নিয়ে আগের আলোচনাগুলোতে বেশ কিছু অগ্রগতি হয়েছে। ছয়টি কমিশনের সুপারিশের সারাংশে দলগুলো প্রাথমিক ঐকমত্যে পৌঁছেছে। এছাড়া আরও ১৩টি বিষয়ে ‘নোট অব ডিসেন্ট’ বা ভিন্নমতসহ ঐকমত্য হয়েছে। আজকের বৈঠকে বাকি থাকা বিষয়গুলোর নিষ্পত্তি হওয়াই এখন মূল লক্ষ্য।

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দারের সঞ্চালনায় এই বৈঠকে কমিশনের পক্ষে আরও উপস্থিত রয়েছেন বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, ড. ইফতেখারুজ্জামান, ড. বদিউল আলম মজুমদার, সফর রাজ হোসেন এবং ড. মো. আইয়ুব মিয়া। পুরো বৈঠকটি বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি) সরাসরি সম্প্রচার করছে।