গোপন নথি ফাঁস: সব বন্দির মুক্তি ও যুদ্ধ থামানোর সুযোগ ফিরিয়ে দিয়েছিলেন নেতানিয়াহু
- Details
- by আন্তর্জাতিক ডেস্ক
গাজায় যুদ্ধবিরতি ও সব বন্দির মুক্তির একটি মোক্ষম সুযোগ তৈরি হলেও প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বিরোধিতায় তা ভেস্তে যায়। সম্প্রতি ইসরায়েলের শীর্ষস্থানীয় একটি টেলিভিশন চ্যানেলের ফাঁস করা গোপন নথিতে এই বিস্ফোরক তথ্য উঠে এসেছে। এই প্রতিবেদন প্রকাশের পর নেতানিয়াহু সরকারের বিরুদ্ধে ইচ্ছাকৃতভাবে সমঝোতা নষ্ট করার অভিযোগ তুলে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছে বন্দিদের পরিবার।

তুরস্কের সংবাদ সংস্থা আনাদোলু এজেন্সির এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়।
ইসরায়েলের ‘চ্যানেল ১৩’-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফাঁস হওয়া বৈঠকের কার্যবিবরণী থেকে দেখা যায়, দেশটির শীর্ষ নিরাপত্তা কর্মকর্তারা একটি পূর্ণাঙ্গ সমঝোতায় পৌঁছানো সম্ভব বলে বিশ্বাস করতেন। তাদের ধারণা ছিল, চুক্তির পর প্রয়োজন হলে যুদ্ধ পুনরায় শুরু করা যাবে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু এই পরিকল্পনার তীব্র বিরোধিতা করেন।
প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, ইসরায়েলি নেতৃত্ব এই ভেবে ভুল করেছিল যে মানবিক চাপ সৃষ্টি করলে হামাস আত্মসমর্পণ করবে। কিন্তু পাঁচ মাস পেরিয়ে যাওয়ার পরও দেখা গেছে, গাজায় ত্রাণ প্রবেশে কড়াকড়ি আরোপ করে ইসরায়েল আন্তর্জাতিকভাবে সমালোচিত হলেও হামাসের অবস্থানে কোনো পরিবর্তন আসেনি।
ফাঁস হওয়া নথি অনুযায়ী, এ বিষয়ে ইসরায়েলি নেতৃত্বের প্রথম গোপন বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়েছিল গত ১ মার্চ, যখন গাজায় প্রথম দফার যুদ্ধবিরতি চলছিল। সে সময় চার ইসরায়েলি বন্দির মরদেহ ফেরত পাওয়ার পর দেশটির নেতারা পরবর্তী ধাপের আলোচনা শুরু করেন, যেখানে যুদ্ধ পুরোপুরি বন্ধ করে বাকি বন্দিদের মুক্ত করার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল। কিন্তু নেতানিয়াহুর নেতৃত্বাধীন রাজনৈতিক শিবির সেই প্রস্তাব সরাসরি প্রত্যাখ্যান করে।
বৈঠকে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর বন্দি ও নিখোঁজ বিষয়ক কর্মকর্তা মেজর জেনারেল নিতজান অ্যালোন বলেন, ‘বন্দিদের মুক্তির একমাত্র সুযোগ হলো দ্বিতীয় ধাপের শর্ত নিয়ে আলোচনা শুরু করা।’ এর জবাবে কৌশলগত বিষয়ক মন্ত্রী রন ডারমার মন্তব্য করেন, ‘হামাস যদি ক্ষমতায় থাকে, তাহলে আমরা যুদ্ধ থামাতে প্রস্তুত নই।’
এ সময় গোয়েন্দা সংস্থা শিন বেতের তৎকালীন প্রধান রোনেন বার একটি বিকল্প প্রস্তাব দিয়ে বলেন, ‘যুদ্ধ শেষ করে বন্দিদের ফিরিয়ে আনা উচিত, পরে আবার লড়াই শুরু করা যাবে।’ কিন্তু নেতানিয়াহু এই প্রস্তাবও প্রত্যাখ্যান করেন। এর জের ধরেই ১৮ মার্চ থেকে গাজায় পুনরায় পুরোদমে হামলা শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী।
চ্যানেল ১৩-এর এই প্রতিবেদন প্রকাশের পর তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ‘বন্দি ও নিখোঁজ পরিবার ফোরাম’। এক বিবৃতিতে তারা বলেছে, ‘এই প্রতিবেদন প্রমাণ করে, সরকার ইচ্ছাকৃতভাবে একটি ভালো সমঝোতা নষ্ট করেছে এবং দেশের মানুষকে অন্ধকারে রেখেছে।’
তারা অভিযোগ করে, ‘আমাদের অনেক আত্মীয় গাজায় জীবিত অবস্থায় বন্দি ছিলেন, যারা এমন একটি চুক্তির অপেক্ষায় থাকতে থাকতে মারা গেছেন, যা নেতানিয়াহুর সরকার আদৌ করতে চায়নি।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘নিরাপত্তা কর্মকর্তারা সব বন্দিকে মুক্ত করা এবং হামাসকে পরাজিত করার জন্য একাধিক যৌক্তিক ও সৃজনশীল পরিকল্পনা দিয়েছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেগুলো বাস্তবায়ন করা হয়নি।’
বিভিন্ন সূত্রের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে গাজায় আনুমানিক ৫০ জন ইসরায়েলি বন্দি রয়েছেন, যাদের মধ্যে ২০ জন জীবিত বলে ধারণা করা হয়। অন্যদিকে, ইসরায়েলের কারাগারে প্রায় ১০ হাজার ৮০০-এর বেশি ফিলিস্তিনি বন্দি রয়েছেন। বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থার প্রতিবেদনে তাদের ওপর নির্যাতন, খাদ্যাভাব ও চিকিৎসায় অবহেলার মতো গুরুতর অভিযোগ আনা হয়েছে।
গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...
খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর
Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.
Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.