বিশ্বজুড়ে বাড়ছে চিকুনগুনিয়ার প্রকোপ, মৃত্যু ৯০

মশাবাহিত ভাইরাস জ্বর চিকুনগুনিয়ার প্রকোপ বিশ্বজুড়ে বাড়ছে। ইউরোপীয় রোগ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রের (ইসিডিসি) তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ২ লাখ ৪০ হাজার মানুষ এই রোগে আক্রান্ত হয়েছেন।

আমেরিকা, আফ্রিকা, এশিয়া ও ইউরোপের ১৬টি দেশ ও অঞ্চলে জুলাই মাস পর্যন্ত এই ভাইরাসের সংক্রমণ নথিভুক্ত করা হয়েছে, যাতে মৃত্যু হয়েছে ৯০ জনের।

আক্রান্তের একটি বড় অংশ লাতিন আমেরিকার বাসিন্দা। ইসিডিসির তথ্যমতে, এই অঞ্চলে ব্রাজিলে ১ লাখ ৮৫ হাজার ৫৫৩ জন, বলিভিয়ায় ৪ হাজার ৭২১, আর্জেন্টিনায় ২ হাজার ৮৩৬ এবং পেরুতে ৫৫ জন চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন।

এশিয়ায় ৩৪ হাজারের বেশি সংক্রমণের খবর পাওয়া গেছে। চীন, ভারত, শ্রীলঙ্কা, মরিশাস, সিঙ্গাপুর, পাকিস্তান, তাইওয়ান এবং হংকং থেকে এই সংক্রমণের তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে। এশিয়ার মধ্যে, চীনের দক্ষিণাঞ্চলীয় প্রদেশ গুয়াংডং-এ এই বছর সবচেয়ে বেশি—প্রায় ৮ হাজার—মানুষ ভাইরাসজনিত এই রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। সিঙ্গাপুর ও তাইওয়ানে প্রত্যেকটিতে ১৭টি সংক্রমণের ঘটনা নথিভুক্ত করা হয়েছে, যেখানে আক্রান্তদের অনেকেরই প্রভাবিত অঞ্চলে ভ্রমণের ইতিহাস রয়েছে।

আফ্রিকা অঞ্চলে সেনেগাল ও কেনিয়ায় চিকুনগুনিয়ার সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। এদিকে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং ইউরোপীয় অর্থনৈতিক অঞ্চলের দেশগুলোতে আফ্রিকার মাদাগাস্কার ও সেশেলসের মতো দেশ থেকে আসা ভ্রমণকারীদের মধ্যে এই রোগের সংক্রমণ পাওয়া গেছে। এটি ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চিকুনগুনিয়ার আরও ব্যাপক বিস্তারের ইঙ্গিত বহন করে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

চিকুনগুনিয়া ভাইরাস সংক্রামিত মশার কামড়ের মাধ্যমে মানুষের মধ্যে ছড়ায়। এর সবচেয়ে সাধারণ উপসর্গগুলোর মধ্যে রয়েছে জ্বর এবং অস্থিসন্ধিতে তীব্র ব্যথা।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ভাইরাস খুব কম ক্ষেত্রেই প্রাণঘাতী হয়। তবে নবজাতক, বয়স্ক এবং যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল, তাদের ক্ষেত্রে ঝুঁকি তুলনামূলকভাবে বেশি থাকে।