বাংলাদেশে মানবাধিকার পরিস্থিতি স্থিতিশীল, তবে কিছু উদ্বেগ রয়ে গেছে

বাংলাদেশে গত বছরের জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী অগাস্টে ঘটে যাওয়া কিছু ঘটনার পর মানবাধিকার পরিস্থিতি স্থিতিশীল হয়েছে, তবে কিছু উদ্বেগ এখনো বিদ্যমান এমন তথ্য উঠে এসেছে যুক্তরাষ্ট্র পররাষ্ট্র দপ্তরের এক প্রতিবেদনে।

‘২০২৪ কান্ট্রি রিপোর্টস অন হিউম্যান রাইটস প্র্যাকটিসেস: বাংলাদেশ’ শিরোনামের ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পূর্ববর্তী সরকারের আমলে সংঘটিত উল্লেখযোগ্য মানবাধিকার লঙ্ঘনের মধ্যে ছিল বেআইনি বা বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, গুম, নির্যাতন বা অমানবিক ও অপমানজনক আচরণ, নির্বিচারে গ্রেপ্তার বা আটক, বিদেশে অবস্থানরত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় দমননীতি, মতপ্রকাশ ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতায় গুরুতর বিধিনিষেধ, সাংবাদিকদের ওপর সহিংসতা বা হুমকি, অযৌক্তিক গ্রেপ্তার বা মামলা, সেন্সরশিপ, শ্রমিকদের সংগঠিত হওয়ার স্বাধীনতায় বড় ধরনের বাধা, শ্রমিক নেতা বা ইউনিয়ন সদস্যদের ওপর সহিংসতা বা হুমকি এবং শিশু শ্রমের সবচেয়ে ভয়াবহ রূপের উপস্থিতি।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, পূর্ববর্তী সরকারের আমলে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় দায়মুক্তির সংস্কৃতি ব্যাপক ছিল। এ ধরনের অপরাধে জড়িত সরকারি কর্মকর্তা বা নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের শনাক্ত ও শাস্তি দেওয়ার জন্য তারা খুব কমই কার্যকর পদক্ষেপ নিয়েছিল।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত বছরের জুলাই-আগস্টে টানা ছাত্র বিক্ষোভে শত শত মানুষ পুলিশ ও আওয়ামী লীগের সহযোগী ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত হয়। ৫ আগস্ট তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশত্যাগ করেন এবং ৮ আগস্ট নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রধান উপদেষ্টা করে অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করা হয়।

পূর্ববর্তী সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকার মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে অভিযুক্ত সাবেক সরকারি কর্মকর্তাদের গ্রেপ্তার করে। মানবাধিকার সংস্থা ও গণমাধ্যমের বিশ্বাসযোগ্য প্রতিবেদনে বিশেষ করে ছাত্রলীগের হাতে গত বছরের জুলাই ও আগস্টে সংঘটিত গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের তথ্য পাওয়া যায়।

যুক্তরাষ্ট্র পররাষ্ট্র দপ্তরের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনতে অন্তর্বর্তী সরকার জাতিসংঘের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করেছে এবং দেশের প্রচলিত বিচারব্যবস্থার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালকেও ব্যবহার করেছে।