নির্বাচনী সীমানা নিয়ে ফেসবুকের তর্ক গড়াল সংঘর্ষে, আহত ২৫

ফেসবুকে দেওয়া একটি মন্তব্যকে কেন্দ্র করে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরে দুই পক্ষের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে, এতে অন্তত ২৫ জন আহত হয়েছেন। উপজেলার হরষপুর ইউনিয়নের হাজীপুর গ্রামে পাঠান বাড়ি ও ঐক্কি বাড়ির লোকজনের মধ্যে এই সংঘাত হয়। শনিবার বেলা ১১টা থেকে প্রায় ঘণ্টাব্যাপী চলা এই সংঘর্ষের খবর পেয়ে পুলিশ ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।

ঘটনার মূলে ছিল আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণের একটি প্রস্তাব। নির্বাচন কমিশনের প্রাথমিক গেজেট অনুযায়ী, বিজয়নগর উপজেলার হরষপুর, চান্দুরা ও বুধন্তি ইউনিয়নকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসন থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনের সঙ্গে যুক্ত করার প্রস্তাব করা হয়। এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে ইউনিয়ন তিনটিকে আগের আসনেই রাখার জন্য প্রধান নির্বাচন কমিশনের কাছে আবেদন করেন এলাকার চারজন বাসিন্দা। এই বিষয়টি নিয়েই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পক্ষে-বিপক্ষে আলোচনার সূত্রপাত হয়।

এরই জের ধরে হাজীপুর গ্রামের দুই তরুণের মধ্যে ফেসবুকে মন্তব্যের মাধ্যমে কথা কাটাকাটি শুরু হয়, যা পরবর্তীতে পারিবারিক পর্যায়ে ছড়িয়ে পড়ে। উত্তেজনা বাড়তে থাকলে গত ১৪ জুলাই পাঠান বাড়ির লোকজন ঐক্কি বাড়ির আরজু মিয়া ও তার মেয়ে আকলিমা বেগমের ওপর হামলা চালায় বলে অভিযোগ ওঠে। এরপর থেকেই দুই পক্ষের মধ্যে চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছিল, যা শনিবার সকালে ভয়াবহ সংঘর্ষের রূপ নেয়। উভয় পক্ষ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে একে অপরের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়লে ইটপাটকেলের আঘাতে অন্তত ২৫ জন আহত হন। তবে কারও আঘাত গুরুতর নয় বলে জানা গেছে।

হরষপুর ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান মো. আবুল কাশেম বলেন, ‘ফেসবুকে মন্তব্য করা নিয়েই এই দুঃখজনক ঘটনাটি ঘটেছে। খবর পেয়ে আমরা পুলিশসহ ঘটনাস্থলে যাই এবং উভয় পক্ষকে শান্ত করি।’

এ বিষয়ে বিজয়নগর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) অমিতাভ দাস তালুকদার জানান, সংঘর্ষের খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বর্তমানে পরিস্থিতি  শান্ত রয়েছে এবং অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ‘এখনও কোনো পক্ষ থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’