বড় দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা, মহানগর এক্সপ্রেসের বগি বিচ্ছিন্ন

একটি ভয়াবহ দুর্ঘটনা থেকে অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছেন ঢাকাগামী আন্তনগর মহানগর এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রীরা। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় চলন্ত অবস্থায় ট্রেনটির বগি বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়লেও প্রায় চার ঘণ্টা পর রেল যোগাযোগ স্বাভাবিক হয়েছে। তবে, এই ঘটনার জেরে ট্রেনের সময়সূচিতে কিছুটা বিপর্যয় দেখা দিয়েছে।

ঘটনাটি ঘটে গত সোমবার (১৮ আগস্ট) বিকেল ৫টা ৩৫ মিনিটে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ স্টেশনে প্রবেশের সময় মহানগর এক্সপ্রেসের ‘ট’ ও ‘ঠ’ বগির মাঝখানে বিভাজন তৈরি হয়। এতে পেছনের পাঁচটি বগি মূল ট্রেন থেকে আলাদা হয়ে যায়। মূল অংশটি আশুগঞ্জ স্টেশনে প্রবেশ করলেও বিচ্ছিন্ন বগিগুলো আশুগঞ্জ যাত্রাবাড়ী এলাকায় অবস্থান করছিল।

এই আকস্মিক বিচ্ছিন্ন হওয়ার ফলে আপলাইনে ঢাকার সঙ্গে ট্রেন চলাচল পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। যদিও বিকল্প হিসেবে ডাউনলাইন ব্যবহার করে কিছুটা বিলম্বে ঢাকার সঙ্গে ট্রেন চলাচল সচল রাখা সম্ভব হয়েছিল, তবুও যাত্রীদের ভোগান্তি ছিল চরমে।

ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয়ে শঙ্কিত ছিলেন অনেক যাত্রী। ঢাকাগামী মহানগর গোধূলির যাত্রী মো. নূর জানান, তার বড় ভাই বিদেশ যাবেন, রাতে ফ্লাইট। ট্রেনের এমন পরিস্থিতিতে তিনি সময়মতো যেতে পারবেন কি না, তা নিয়ে চিন্তায় আছেন। আরেক যাত্রী অ্যাডভোকেট সৈয়দ মো. জামাল বলেন, প্রায় এক ঘণ্টার বেশি সময় ধরে স্টেশনে বসে আছেন এবং আদৌ গন্তব্যে পৌঁছাতে পারবেন কি না, তা নিয়ে শঙ্কায় আছেন। তিনি আরও বলেন, যাদের কারণে এমন ঘটনা ঘটল, তদন্ত করে তাদের বিচারের মুখোমুখি করা উচিত। মোহাম্মদ উজ্জ্বল মিয়া নামের এক ট্রেনযাত্রী জানান, মহানগর এক্সপ্রেস ট্রেনের বিচ্ছিন্ন হওয়া পাঁচ বগির যাত্রীরা অল্পের জন্য বেঁচে গেছেন। তিনি বলেন, ‘সে সময় যদি আপলাইন দিয়ে অন্য ট্রেন আসতো, তাহলে নিশ্চিতভাবে বিচ্ছিন্ন বগির সঙ্গে ভয়াবহ সংঘর্ষ হতো এবং হতাহতের ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা ছিল। তবে, আল্লাহর সহায়তায় আমরা বড় ধরনের দুর্ঘটনা থেকে অল্পের জন্য বেঁচে গেছি।’

এদিকে, বিচ্ছিন্ন অংশটি উদ্ধারের সময় আরও একটি অপ্রত্যাশিত ঘটনা ঘটে। কর্ণফুলী এক্সপ্রেস ট্রেনের ইঞ্জিনও বিকল হয়ে যায়, যা উদ্ধার তৎপরতাকে আরও জটিল করে তোলে। আপলাইন বন্ধ থাকার কারণে ঢাকাগামী মহানগর গোধূলি ও জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস প্রায় এক থেকে দেড় ঘণ্টা বিলম্বে ব্রাহ্মণবাড়িয়া স্টেশন ছেড়ে যায়। পরবর্তীতে রাত ১০টা নাগাদ বিচ্ছিন্ন বগিগুলো ভৈরব জংশনে সরিয়ে নেওয়া হয় এবং এর পরেই আপলাইন দিয়ে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশনের সহকারী স্টেশনমাস্টার অশোক কুমার দাস বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তবে, কী কারণে এমন ঘটনা ঘটলো, তাৎক্ষণিকভাবে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ তা নিশ্চিত করে জানাতে পারেনি।