ডায়াবেটিস-কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখুন, পাতে থাক ঢ্যাঁড়শ

আধুনিক ব্যস্ত জীবনে ডায়াবেটিস, কোলেস্টেরল ও বাড়তি ওজনের মতো সমস্যাগুলো যেন নিত্যসঙ্গী হয়ে উঠেছে। এসব থেকে মুক্তি পেতে আমরা চিকিৎসা ও খাদ্যাভ্যাসে নানা পরিবর্তন আনি। তবে অনেক সময় রান্নাঘরে থাকা সাধারণ সবজির অসাধারণ গুণের কথা ভুলে যাই। এমনই এক অবহেলিত সবজি হলো ঢ্যাঁড়শ, যা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ থেকে শুরু করে হৃৎপিণ্ডের যত্ন নেওয়া পর্যন্ত অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে: যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব হেলথের একটি গবেষণায় দেখা গেছে, ঢ্যাঁড়শ রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ভূমিকা রাখে। এতে থাকা আঁশ রক্তে শর্করার শোষণ প্রক্রিয়াকে ধীর করে দেয়। ফলে টাইপ-১ ও টাইপ-২ উভয় ধরনের ডায়াবেটিসেই এটি উপকারী হতে পারে।

কোলেস্টেরল কমায়: ঢ্যাঁড়শে থাকা দ্রবণীয় আঁশ হজমের সময় কোলেস্টেরলের অণুর সঙ্গে যুক্ত হয়ে তা শরীর থেকে বের করে দেয়। এর ফলে রক্তে ক্ষতিকর কোলেস্টেরলের মাত্রা কমে, যা হৃদ্‌রোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। এছাড়া, ঢ্যাঁড়শের পলিফেনল রক্তনালিতে রক্ত জমাট বাঁধা প্রতিরোধ করে এবং মস্তিষ্কের প্রদাহ কমিয়ে স্নায়ুতন্ত্রকে সুস্থ রাখে।

ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক: যারা ওজন কমানোর চেষ্টায় আছেন, তাদের খাদ্যতালিকায় ঢ্যাঁড়শ হতে পারে একটি চমৎকার সংযোজন। আঁশসমৃদ্ধ হওয়ায় এই সবজিটি অল্প খেলেই পেট ভরে যায় এবং দীর্ঘক্ষণ ক্ষুধা অনুভূত হয় না। এতে অতিরিক্ত খাবার গ্রহণের প্রবণতা কমে, যা ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক হয়।

খাওয়ার নিয়ম ও সতর্কতা: ঢ্যাঁড়শ ভর্তা, ভাজি, ঝোল অথবা স্যুপ হিসেবেও খাওয়া যায়। তবে এর পুষ্টিগুণ পুরোপুরি পেতে হলে অল্প তেল ও মসলা দিয়ে রান্না করাই ভালো। হালকা ভাপ দিয়ে বা চিপসের মতো শুকিয়েও এটি খাওয়া যেতে পারে।

তবে একটি বিষয়ে সতর্ক থাকা প্রয়োজন। ঢ্যাঁড়শের সঙ্গে লেবু বা আমলকীর মতো টকজাতীয় খাবার খেলে গ্যাস বা অ্যাসিডিটির সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই একসঙ্গে এ ধরনের খাবার এড়িয়ে চলাই শ্রেয়।