মাহফুজ আলমের ওপর হামলা: সরকারের নীরবতায় ঢাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে বাংলাদেশ কনস্যুলেট দপ্তরে তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের ওপর হামলার ঘটনায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নীরবতায় প্রশ্ন তুলেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে আয়োজিত এক বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে তারা এই প্রশ্ন তোলেন।

‘জুলাই বিপ্লবী শিক্ষার্থী ও নাগরিকবৃন্দ’–এর ব্যানারে আয়োজিত ওই সমাবেশে বক্তারা বলেন, মাহফুজ আলম ‘জুলাই বিপ্লবের’ একজন অন্যতম নেতা। তার ওপর হামলার পরেও অন্তর্বর্তী সরকার এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নীরবতা হতাশাজনক।

বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা বলেন, ‘জুলাই বিপ্লবের এক বছর পার হলেও বিপ্লবীদের ওপর হামলা বন্ধ হয়নি। নিউইয়র্কের মতো একটি জায়গায় বাংলাদেশের একজন উপদেষ্টার ওপর হামলা হয়, অথচ সরকার কোনো জোরালো পদক্ষেপ নিচ্ছে না।’

জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের সহকারী সদস্য সচিব আব্দুস সালাম বলেন, ‘আমরা পঁচাত্তরের পর যে ধরনের সুশীলতা দেখেছিলাম, এখনো তেমনই দেখছি। ফ্যাসিবাদী শক্তিকে শুধু সাময়িকভাবে নিষিদ্ধ করলে হবে না, নতুন সংবিধানে তাদের নিষিদ্ধ করতে হবে এবং তাদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দিতে হবে।’

বিপ্লবী ছাত্র পরিষদের আহ্বায়ক আবদুল ওয়াহেদ বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলো বিপ্লবের সুবিধা নেয়, কিন্তু বিপ্লবীদের পাশে দাঁড়ায় না। তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের ওপর হামলার পরও তারা নিশ্চুপ।’ এ সময় তিনি অভিযোগ করেন, নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামী লীগের বিভিন্ন ফেসবুক পাতা থেকে ছবি প্রচার করে তাকেও হত্যার হুমকি দেওয়া হচ্ছে।

বিক্ষোভকারীরা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি কয়েকটি দাবি তুলে ধরেন। এর মধ্যে রয়েছে—যুক্তরাষ্ট্র সরকারের কাছে এ হামলার বিষয়ে জবাবদিহি চাওয়া, হামলাকারীদের শনাক্ত করে দ্রুত শাস্তির আওতায় আনা এবং বিদেশে পলাতক অভিযুক্তদের বিচারের জন্য কূটনৈতিক তৎপরতা চালানো।

বিপ্লবী ছাত্র পরিষদের সদস্য সচিব ফজলুর রহমান বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারের উচিত মার্কিন সরকারের কাছে ব্যাখ্যা দাবি করা। কেন তারা একজন বিদেশি অতিথিকে নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হলো, তা স্পষ্ট করতে হবে।’

বক্তারা আরও বলেন, মাহফুজ আলমের ওপর হামলা বিচ্ছিন্ন কোনো ঘটনা নয়, এটি জুলাই বিপ্লবের সব যোদ্ধার ওপর হামলার শামিল। তারা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, হামলাকারীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা না হলে কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।

সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন জুলাই বিপ্লবের আহত যোদ্ধা মাওলানা শফিকুর রহমান, বিপ্লবী ছাত্র পরিষদের সহকারী সদস্য সচিব জিহাদী ইহসান, পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র সংসদের সাংগঠনিক সম্পাদক রিয়াজুল হাসান এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল মুস্তাকিম ও সৌরভ অন্তর।