খালেদা জিয়াকে ৫ বছর সাজা দেওয়া সেই বিচারপতির পদত্যাগ

অনিয়মের অভিযোগের জেরে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের তলবের পর পদত্যাগ করেছেন হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি ড. আখতারুজ্জামান। গত রবিবার, ৩১ আগস্ট, তিনি প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন। প্রধান বিচারপতি ইতোমধ্যে রাষ্ট্রপতির দপ্তরে ওই পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দিয়েছেন।

এই পদত্যাগকে বিচার বিভাগে চলমান একটি বিস্তৃত তদন্তের অংশ হিসেবে দেখা হচ্ছে। এর আগে, গত ১৬ অক্টোবর প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ দুর্নীতির অভিযোগে ১২ জন বিচারপতিকে ছুটিতে পাঠান এবং তাদের বেঞ্চ থেকে সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। সাবেক সরকারের সহযোগী হিসেবে কাজ করার অভিযোগ ওঠার পর এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল।

অভিযোগ ওঠা ওই বারো জন বিচারপতি হলেন বিচারপতি খিজির হায়াত, বিচারপতি নাইমা হায়দার, বিচারপতি মো. আখতারুজ্জামান, বিচারপতি আশীষ রঞ্জন দাস, বিচারপতি এস এম মাসুদ হোসেন দোলন, বিচারপতি মোহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকার, বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ, বিচারপতি মো. আমিনুল ইসলাম, বিচারপতি এস এম মনিরুজ্জামান, বিচারপতি শাহেদ নূর উদ্দিন, বিচারপতি আতাউর রহমান খান এবং বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামান।

প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল এই বারো জন বিচারপতির বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে। এরই ধারাবাহিকতায় বিচারপতি মো. আখতারুজ্জামানকে গত ১ জুলাই সশরীরে হাজির হয়ে অভিযোগের বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছিল। এর আগে, গত ২৩ মার্চ রাষ্ট্রপতি বিচারপতি মো. আখতারুজ্জামানের বিরুদ্ধে পূর্ণাঙ্গ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন।

উল্লেখ্য, বিচারপতি মো. আখতারুজ্জামান ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক থাকাকালে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় একটি রায় দিয়েছিলেন। বকশীবাজারে কারা অধিদপ্তরের প্যারেড গ্রাউন্ডে স্থাপিত ওই আদালতে তিনি সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন। একই মামলায় তিনি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, মাগুরার সাবেক এমপি কাজী সালিমুল হক কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী এবং মমিনুর রহমানকে দশ বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছিলেন।

বিচার বিভাগের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের এই তদন্ত কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। অভিযোগ ওঠা অন্য বিচারপতিদের বিষয়েও পর্যালোচনা চলছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।