টেলিযোগাযোগ খাতে যুগান্তকারী পরিবর্তন, বদলে গেল লাইসেন্স কাঠামো

টেলিযোগাযোগ খাতে সেবার মান বাড়াতে ও খরচের সামঞ্জস্যতা আনতে ২৬ ধরনের লাইসেন্স কমিয়ে মাত্র তিন প্রকারে সীমাবদ্ধ করা হয়েছে। উপদেষ্টা পরিষদের অনুমোদন পাওয়া ‘টেলিযোগাযোগস নেটওয়ার্ক অ্যান্ড লাইসেন্সিং নীতি, ২০২৫’-এর অধীনে এই যুগান্তকারী পরিবর্তন আনা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়-বিষয়ক প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। তিনি জানান, নতুন এই নীতিমালার ফলে নাগরিকের চাহিদা অনুযায়ী উন্নত সেবা নিশ্চিত করা সহজ হবে।

আগের নীতিমালায় ২৬ ধরনের প্রায় ৩ হাজার ২৯৯টি লাইসেন্স থাকায় সেবার মান নিশ্চিত করা একটি বড় চ্যালেঞ্জ ছিল। ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, ‘বহুমাত্রিক লাইসেন্স পদ্ধতির কারণে মধ্যস্বত্বভোগীরা উল্লেখযোগ্য ভ্যালু এড না করেই রাজস্বের অংশে ভাগ বসাত, যা এই পলিসির মাধ্যমে পরিবর্তিত হয়েছে।’ নতুন নীতিমালায় এই সুযোগ বন্ধ হওয়ায় সরকারের রাজস্ব বাড়বে, যা জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ ও সাশ্রয়ী মূল্যে সেবা দেওয়ার মতো কাজে ব্যবহার করা হবে।

নতুন এই নীতিমালা মোবাইল ভার্চুয়াল নেটওয়ার্ক অপারেটর (এমভিএনও), ভিও-ওয়াইফাই, ওয়াইফাই ৬, ওয়াইফাই ৭, ইন্টারনেট অব থিংস (আইওটি) ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) মতো আধুনিক প্রযুক্তির সম্প্রসারণের পথ খুলে দিয়েছে। এর ফলে নিত্যনতুন ডিজিটাল সেবা চালুর প্রতিবন্ধকতা দূর হবে এবং ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের জন্য উদ্ভাবনের সুযোগ তৈরি হবে।

এর আগে, গত ২০ জুলাই পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদকে প্রধান করে গঠিত চার সদস্যের একটি কমিটি নীতিমালার খসড়া পর্যালোচনা করে। কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে প্রায় ১০টি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনা হয়েছে। নতুন নীতিতে থাকা অ্যাকটিভ ও প্যাসিভ শেয়ারিংয়ের সুযোগ টেলিকম কোম্পানিগুলোকে আরও প্রতিযোগিতামূলক করে তুলবে, যা বিদেশি বিনিয়োগকেও উৎসাহিত করবে। এর মাধ্যমে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে কানেক্টিভিটির আওতায় আনা এবং কৃষি, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে টেলিযোগাযোগ সেবার কার্যকর অবদান নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।