ব্রডব্যান্ডে সর্বনিম্ন গতি ১৫, মোবাইলে ১০ এমবিপিএস

গ্রাহকদের উন্নত সেবা নিশ্চিত করতে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের ন্যূনতম গতি ১৫ এমবিপিএস এবং মোবাইল ইন্টারনেটের গতি ১০ এমবিপিএস নির্ধারণ করা হয়েছে। ‘টেলিকমিউনিকেশন নেটওয়ার্ক অ্যান্ড লাইসেন্সিং পলিসি-২০২৫’ এর আওতায় যুগান্তকারী এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানান প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। তিনি জানান, নতুন এই নীতিমালার মাধ্যমে দীর্ঘদিনের জটিল এবং মধ্যস্বত্বভোগী নির্ভর লাইসেন্সিং ব্যবস্থার অবসান ঘটানো হয়েছে।

বর্তমানে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) অধীনে প্রায় তিন হাজার প্রতিষ্ঠান ২৬ ধরনের লাইসেন্সের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করছে, যা সেবা ও নিয়ন্ত্রণ উভয় ক্ষেত্রেই বিশৃঙ্খলা তৈরি করেছিল। নতুন নীতিমালায় এই জটিলতা দূর করে একটি আধুনিক ও যুগোপযোগী তিন স্তরের লাইসেন্স কাঠামো চালু করা হয়েছে। এর ফলে টেলিযোগাযোগ খাতে একচেটিয়া আধিপত্য কমবে এবং একটি প্রতিযোগিতামূলক বাজার তৈরি হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

নতুন কাঠামোর আওতায় জাতীয় অবকাঠামো খাতকে আরও বিনিয়োগবান্ধব করা হয়েছে। এখন থেকে টাওয়ার কোম্পানি, ফাইবার নেটওয়ার্ক ও ডেটা সেন্টারগুলো একে অপরের খাতে বিনিয়োগ ও ব্যবসা পরিচালনা করতে পারবে। ক্লাউড ব্যবসার ক্ষেত্রে লাইসেন্সের বাধ্যবাধকতাও তুলে নেওয়া হয়েছে। এই পদক্ষেপের ফলে ফাইবার অপটিক ও টাওয়ার খাতে নতুন অপারেটর আসবে এবং প্রতিযোগিতা বাড়বে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

নীতিমালায় অবকাঠামোগত উন্নয়নেও জোর দেওয়া হয়েছে। আগামী তিন বছরের মধ্যে দেশের ৮০ শতাংশ মোবাইল টাওয়ারে ফাইবার অপটিক সংযোগ পৌঁছানোর লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মাধ্যমে শহর-গ্রাম, পাহাড়-সমতল কিংবা উপকূলীয় অঞ্চলের মতো এলাকাভিত্তিক সেবার বৈষম্য কমিয়ে দেশজুড়ে সমান কভারেজ নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।

ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব আরও জানান, অতিরিক্ত মধ্যস্বত্বভোগী বাদ দেওয়ায় সরকারের রাজস্ব আয় বাড়বে। এর ফলে ভয়েস কল ও ডেটার শুল্ক কাঠামো শিথিল করা বা প্রয়োজনে ভর্তুকি দেওয়া সহজ হবে। এর পাশাপাশি, নতুন নীতিমালায় এমভিএনও, প্রাইভেট ৫জি, ভয়েস ওভার ওয়াইফাই এবং ওয়াইফাই সিক্স ও সেভেনের মতো আধুনিক প্রযুক্তি চালুর পথও খুলে দেওয়া হয়েছে।

নতুন নীতিমালায় বিদেশি মালিকানাধীন কোম্পানিগুলোর জন্য কমপক্ষে ১৫ শতাংশ শেয়ার স্থানীয় বাজারে উন্মুক্ত করার বাধ্যবাধকতা আনা হয়েছে, যদিও এর জন্য কোম্পানিগুলোকে তিন বছরের গ্রেস পিরিয়ড দেওয়া হবে। বিদ্যমান সব লাইসেন্সকে ২০২৭ সালের মধ্যে নতুন কাঠামোর আওতায় নিয়ে আসা হবে বলেও জানানো হয়েছে।