লন্ডনে উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের ওপর হামলাচেষ্টার তীব্র নিন্দা সরকারের

তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের ওপর লন্ডনে হামলাচেষ্টার ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার। শনিবার সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এ ধরনের কর্মকাণ্ড গণতন্ত্রে অগ্রহণযোগ্য এবং সহিংসতা ও ভয়ভীতি প্রদর্শন কখনও বাকস্বাধীনতা হতে পারে না।

শুক্রবার একদল বিক্ষোভকারী লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশনের গাড়িতে ডিম নিক্ষেপ করে এবং গাড়িবহর আটকানোর চেষ্টা করে। ঘটনাটি ঘটে লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি অনুষ্ঠান শেষে, যেখানে বাংলাদেশের জুলাই অভ্যুত্থানের প্রথম বার্ষিকী উপলক্ষে একটি আয়োজন করা হয়েছিল। তবে উপদেষ্টা মাহফুজ আলম সে সময় ওই গাড়িতে ছিলেন না। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

লন্ডনের মেট্রোপলিটন পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে হস্তক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বাংলাদেশ হাইকমিশন জানিয়েছে, পুলিশ উপদেষ্টার কর্মসূচিকালে তাকে পূর্ণ নিরাপত্তার আশ্বাস দিয়েছে এবং সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছে।

এর কয়েক সপ্তাহ আগে নিউইয়র্কে একটি সরকারি অনুষ্ঠানেও মাহফুজ আলমের ওপর প্রায় একই ধরনের হামলার ঘটনা ঘটেছিল। সেখানকার বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেলে বিক্ষোভকারীরা ডিম ও বোতল নিক্ষেপ করলে ভবনের কাচের দরজা ভেঙে যায়। ওই ঘটনার পর ব্যবস্থা নিতে স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছিল মিশন।

লন্ডনের ঘটনার পর সরকার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘সহিংসতা প্রতিবাদ নয়; ভয়ভীতি প্রদর্শন বাকস্বাধীনতা নয়’। বিবৃতিতে আরও বলা হয়, কনস্যুলার যানবাহনকে লক্ষ্যবস্তু করা আন্তর্জাতিক নিয়ম লঙ্ঘন করে। সরকার লন্ডন মেট্রোপলিটন পুলিশের ভূমিকার প্রশংসা করার পাশাপাশি ভিডিও ফুটেজ দেখে অপরাধীদের শনাক্ত করে বিচারের আওতায় আনার জন্য পূর্ণাঙ্গ তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে।

যারা এই হামলাচেষ্টা সংগঠিত করেছে, তাদের উদ্দেশে বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আপনারা যদি নিজেদের যুক্তিতে বিশ্বাসী হন, তবে শান্তিপূর্ণ ও আইনসম্মতভাবে মোকাবিলা করুন’। সরকার জানিয়েছে, একটি আন্দোলনের পরিমাপ তার সহিংসতা দিয়ে নয়, বরং শৃঙ্খলা ও মর্যাদা দিয়ে হয়।

অন্তর্বর্তী সরকার সব রাজনৈতিক নেতা ও প্রবাসী কমিউনিটি সংগঠকদের দলীয় পরিচয়ের ঊর্ধ্বে উঠে এ ধরনের সহিংসতা ও ভীতি প্রদর্শনের সংস্কৃতির বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে নিন্দা জানানোর আহ্বান জানিয়েছে। সরকার শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের অধিকার রক্ষার পাশাপাশি সব নাগরিকের নির্ভয়ে কথা বলা ও সমাবেশ করার স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে নিজেদের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছে।