জুলাই সনদের ভিত্তিতে নির্বাচন চেয়ে কর্মসূচির ঘোষণা জামায়াতসহ ৩ ইসলামী দলের

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন জুলাই সনদের আলোকে আয়োজন এবং সংসদে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব ব্যবস্থা (পিআর পদ্ধতি) চালুর দাবিতে জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এবং বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস পৃথকভাবে তিন দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে।

সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) রাজধানীতে পৃথক সংবাদ সম্মেলনে এসব কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হয়। দলগুলোর নেতারা জানান, জনগণের প্রত্যাশা পূরণে সনদটি কার্যকর করা ছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই।

জামায়াতে ইসলামীর কর্মসূচি

রাজধানীতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে জামায়াতের নায়েবে আমীর সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, জনগণের দাবি আদায়ে গণআন্দোলনের বিকল্প নেই। জুলাই সনদের আলোকে নির্বাচন আয়োজন করতে সরকারকে বাধ্য করতে আমরা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করব।

তিনি বলেন, ১৮ সেপ্টেম্বর ঢাকায়, ১৯ সেপ্টেম্বর বিভাগীয় শহরে এবং ২৬ সেপ্টেম্বর জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল করবে জামায়াত।

দলের পাঁচ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে- ১. জুলাই সনদের আলোকে জাতীয় নির্বাচন আয়োজন, ২. সংসদের দুই কক্ষে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব ব্যবস্থা চালু, ৩. সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি, ৪. পূর্ববর্তী সরকারের সময়ে সংঘটিত দমন-পীড়ন ও দুর্নীতির দৃশ্যমান বিচার এবং স্বৈরাচার জোটের অংশীদার দলগুলোর রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড স্থগিত ও নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা।

ইসলামী আন্দোলনের সমান কর্মসূচি
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর ও চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ রেজাউল করীম একই দাবিতে একই তারিখে দেশব্যাপী বিক্ষোভের কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন। তিনি বলেন, জনগণের রক্তে লেখা জুলাই সনদের বাস্তবায়ন ছাড়া নির্বাচন জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না।

খেলাফত মজলিসের বিস্তারিত প্রস্তাব

বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসও আজ পুরানা পল্টনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে একই দাবিতে তিন দিনের কর্মসূচি দেয়। দলটির মহাসচিব আহমদ আবদুল কাদের বলেন, জুলাই জাতীয় সনদকে সংবিধান ও আইনি স্বীকৃতি দিতে হবে, নাহলে গণঅসন্তোষ আরও বাড়বে।

তিনি সনদটির আইনগত স্বীকৃতির জন্য দুটি প্রস্তাব দেন- গণভোট: সনদ স্বাক্ষরের দুই মাসের মধ্যে গণভোট আয়োজন করে সনদকে সংবিধানিক বৈধতা দেওয়া এবং রাষ্ট্রপতির প্রজ্ঞাপন: সনদের নীতিগত বিষয়গুলো অধ্যাদেশ বা নির্বাহী আদেশে এবং সাংবিধানিক বিষয়গুলো রাষ্ট্রপতির প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে কার্যকর করে নতুন সংসদের প্রথম অধিবেশনে তা অনুমোদন করা।

দলটির অন্যান্য দাবির মধ্যে রয়েছে- সংসদের উচ্চকক্ষের সদস্য নির্বাচন আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব ব্যবস্থায় করা, ‘আওয়ামী ফ্যাসিবাদ’ আমলে সংঘটিত অপরাধের দৃশ্যমান বিচার, ‘ফ্যাসিবাদী জোটের’ সব দলের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড স্থগিত ও তাদের নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা, নির্বাচনে সমান সুযোগ নিশ্চিত করা এবং কালো টাকা ও অবৈধ অস্ত্র দমনে কঠোর ব্যবস্থা এবং প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সঙ্গীত শিক্ষক নিয়োগ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন বাতিল করে ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া।