৭ শতাধিক মণ্ডপকে ঝুঁকিপূর্ণ বলছে সনাতনী জাগরণ জোট

সারাদেশে আসন্ন শারদীয় দুর্গাপূজায় ৭ শতাধিক পূজামণ্ডপকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোট। এ কারণে পূজার নিরাপত্তা নিশ্চিতে প্রতিটি মণ্ডপে সেনা মোতায়েনের দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি। মঙ্গলবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ উদ্বেগের কথা জানানো হয়।

সংগঠনটি জানায়, তাদের কাছে আসা তথ্য অনুযায়ী ঝুঁকিপূর্ণ মণ্ডপের সংখ্যা সাত শতাধিক। এর মধ্যে সাতক্ষীরা জেলায় সর্বোচ্চ ৫৫টি মণ্ডপকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। এছাড়াও কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, গাজীপুর, ময়মনসিংহ ও রাজশাহী জেলার বেশ কিছু মণ্ডপও ঝুঁকিপূর্ণ তালিকায় রয়েছে। ইতোমধ্যে দেশের পাঁচটি জেলায় প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে বলেও সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করা হয়।

পূজার নিরাপত্তা জোরদারে সেনা মোতায়েনের পাশাপাশি প্রতিটি মণ্ডপে সরকারি খরচে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপনেরও অনুরোধ জানানো হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, যেহেতু সেনাবাহিনী বর্তমানে বেসামরিক প্রশাসনের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় কাজ করছে, তাই শান্তিপূর্ণভাবে পূজা উদযাপনের জন্য তাদের মোতায়েন করা যেতে পারে।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সংগঠনের পক্ষে প্রসেনজিৎ কুমার হালদার বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে আট দফা দাবি তুলে ধরেন। দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে—সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনায় নিরপেক্ষ তদন্ত কমিশন গঠন এবং দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত করা, অবিলম্বে সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়ন, একটি পৃথক সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রণালয় গঠন এবং দেবোত্তর সম্পত্তি সংরক্ষণ ও পুনরুদ্ধার আইন প্রণয়ন।

অন্যান্য দাবির মধ্যে হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিষ্টান কল্যাণ ট্রাস্টকে ফাউন্ডেশনে রূপান্তর, সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও হলে সংখ্যালঘুদের জন্য প্রার্থনাকক্ষ স্থাপন, সংস্কৃত ও পালি শিক্ষাবোর্ডকে আধুনিকায়ন এবং দুর্গাপূজায় পাঁচ দিনের সরকারি ছুটির দাবি জানানো হয়।

এর পাশাপাশি আসন্ন পূজাকে কেন্দ্র করে দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য আরও কয়েকটি দাবি জানানো হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে দুর্গাপূজায় তিন দিনের সরকারি ছুটি ঘোষণা এবং জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীসহ কারাগারে থাকা অন্যদের নিঃশর্ত মুক্তি।

এদিকে, দুর্গাপূজা উপলক্ষে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে আগামী বুধবার থেকে সারাদেশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা মাঠে নামবেন বলে জানা গেছে। তবে এর আগেই মাঠপর্যায়ে নিরাপত্তা কার্যক্রম ও গোয়েন্দা তৎপরতা শুরু হয়েছে এবং বিভিন্ন বাহিনী নজরদারি জোরদার করেছে।