আপনি পড়ছেন

জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাত ইতিহাসের ‘সবচেয়ে অন্ধকার অধ্যায়গুলোর’ একটির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। একই সঙ্গে গাজা ভূখণ্ডের মানবিক পরিস্থিতির ভয়াবহ অবনতিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন তিনি। মঙ্গলবার কানাডার হ্যামিলটনে মধ্যপ্রাচ্য পরিস্থিতি নিয়ে আয়োজিত নিরাপত্তা পরিষদের এক অধিবেশনে তিনি এই মন্তব্য করেন।

আন্তোনিও গুতেরেস

গুতেরেস বলেন, ‘আমরা ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাতের অন্যতম অন্ধকার একটি অধ্যায়ের মুখোমুখি হয়েছি।’ তিনি আরও যোগ করেন, ‘গাজা শহরে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর নৃশংস আক্রমণ সেখানকার বিপর্যয়কর মানবিক সংকটকে আরও ঘনীভূত করছে।’ তিনি উল্লেখ করেন, অগণিত ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিক এবং অবশিষ্ট জিম্মিরা নিরবচ্ছিন্ন বোমাবর্ষণের নিচে আটকা পড়ে আছে। তাদের খাবার, পানি, বিদ্যুৎ এবং ওষুধ থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। গুতেরেস বলেন, ‘দুর্ভিক্ষ এখন একটি বাস্তবতা। সেখানকার населениеকে ক্রমাগত বাস্তুচ্যুত হতে এবং অনাহারে থাকতে বাধ্য করা হচ্ছে।’ তিনি যোগ করেন, ‘এই পরিস্থিতিকে অসহনীয় এবং নৈতিক ও আইনগতভাবে অগ্রহণযোগ্য বললেও মানুষের দুর্ভোগের ভয়াবহতা বোঝানো সম্ভব নয়।’

আন্তর্জাতিক আইন ও জাতিসংঘের প্রস্তাবগুলো বারবার লঙ্ঘিত হলেও তা উপেক্ষা করা হচ্ছে বলে নিন্দা জানান জাতিসংঘ মহাসচিব। তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘আন্তর্জাতিক মানবিক আইন লঙ্ঘন করা হচ্ছে। দায়মুক্তির সংস্কৃতি বিরাজ করছে এবং আমাদের সম্মিলিত বিশ্বাসযোগ্যতা ক্ষুণ্ণ হচ্ছে।’

এই সংঘাতের আঞ্চলিক প্রভাবের কথা তুলে ধরে গুতেরেস বলেন, ইসরায়েলি সহিংসতা ‘গাজা থেকে অধিকৃত পশ্চিম তীর এবং এর বাইরেও ছড়িয়ে পড়ছে, যার মধ্যে অঞ্চলের বেশ কয়েকটি দেশ এবং সম্প্রতি কাতারও অন্তর্ভুক্ত।’ তিনি গত ৯ সেপ্টেম্বর কাতারে ইসরায়েলি হামলার নিন্দা জানিয়ে বলেন, ‘এটি কেবল কাতারের সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতার লঙ্ঘনই ছিল না, এটি কূটনীতি ও সংঘাত সমাধানের জন্য আমরা যে আদর্শ ও পদ্ধতির ওপর নির্ভর করি, তার জন্যও হুমকি তৈরি করেছে।’

‘দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের সম্ভাবনা ক্রমান্বয়ে বিলীন হয়ে যাচ্ছে এবং এখন তা এক প্রজন্মের মধ্যে সবচেয়ে সংকটময় পর্যায়ে পৌঁছেছে’ বলে হুঁশিয়ারি দেন গুতেরেস। তিনি ইসরায়েলের অবৈধ বসতি স্থাপন, কার্যত ভূমি দখল, জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুতি এবং উগ্রপন্থী ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারীদের দ্বারা পরিচালিত প্রাণঘাতী সহিংসতার তীব্র সমালোচনা করেন। তিনি ই১ এলাকায় বসতি নির্মাণের জন্য ইসরায়েলের সাম্প্রতিক অনুমোদনকে ‘বিশেষভাবে উদ্বেগজনক’ বলে বর্ণনা করে বলেন, ‘এটি বাস্তবায়ন করা হলে অধিকৃত পশ্চিম তীর বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে এবং একটি ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের ভৌগোলিক ধারাবাহিকতা ধ্বংস হয়ে যাবে।’ গুতেরেস বলেন, ‘ইসরায়েলি বসতিগুলো শুধু একটি রাজনৈতিক বিষয় নয়, এগুলো আন্তর্জাতিক আইনের চরম লঙ্ঘন।’

ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ ইসরায়েলের ‘আর্থিক, রাজনৈতিক এবং প্রাতিষ্ঠানিক চাপের’ কারণে ‘অস্তিত্বের সংকটে’ পড়েছে উল্লেখ করে গুতেরেস সতর্ক করেন যে, ‘ইসরায়েলের শুল্ক রাজস্ব আটকে রাখা’ ফিলিস্তিনি অর্থনীতিকে শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতিতে ফেলেছে।

জাতিসংঘ মহাসচিব ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্যের মতো আরও কয়েকটি দেশের ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার বিষয়টিকে স্বাগত জানান। তিনি এটিকে ‘দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের সবচেয়ে স্পষ্ট পথ’ হিসেবে উল্লেখ করে এই সুযোগ কাজে লাগাতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি জোর দিয়ে বলেন, গাজার ভবিষ্যৎ অবশ্যই আন্তর্জাতিক আইনের ওপর ভিত্তি করে হতে হবে, যেকোনো ধরনের জাতিগত নির্মূলকে প্রত্যাখ্যান করতে হবে এবং একটি কার্যকর দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের দিকে স্পষ্ট রাজনৈতিক পথনির্দেশনা থাকতে হবে।

গুতেরেস আরও বলেন, ‘আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের আহ্বান অবশ্যই মানতে হবে। এর মধ্যে রয়েছে বসতি স্থাপন কার্যক্রম অবিলম্বে বন্ধ করা এবং অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইসরায়েলের বেআইনি উপস্থিতির অবসান ঘটানো।’

গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...

খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর

Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.

Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.