সাত কলেজের নতুন অধ্যায়: সকালে এইচএসসি, বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়

রাজধানীর সাতটি সরকারি কলেজের অবকাঠামো ব্যবহার করে প্রতিষ্ঠিত হতে যাওয়া ‘ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি’র শিক্ষা কার্যক্রম বিকেলে পরিচালিত হবে। বিশ্ববিদ্যালয়টির খসড়া অধ্যাদেশ অনুযায়ী, বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস চলবে দুপুর ১টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত। আর কলেজগুলোর উচ্চমাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের জন্য সকালের সময় বরাদ্দ থাকবে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ গত ২৪ সেপ্টেম্বর ‘ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি অধ্যাদেশ-২০২৫’-এর খসড়াটি মতামতের জন্য প্রকাশ করেছে এবং এর জন্য সাত দিনের সময় দিয়েছে। এই অধ্যাদেশ অনুযায়ী, ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, সরকারি তিতুমীর কলেজ, সরকারি বাঙলা কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ এবং কবি নজরুল সরকারি কলেজের ক্যাম্পাস ও অবকাঠামো ব্যবহার করেই নতুন এই বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম চলবে।

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সদস্য অধ্যাপক মোহাম্মদ তানজীমউদ্দিন খান এ বিষয়ে জানান, সাতটি কলেজের ক্যাম্পাসেই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হবে। তিনি বলেন, ‘কলেজের উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের শিক্ষা কার্যক্রম বেলা ১২টার মধ্যেই শেষ হয়ে যাবে। তাদের জন্য সময় রেখে বিকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। দুপুর ১টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হবে’।

দীর্ঘদিন ধরে নানা জটিলতার পর সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা একটি স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবি জানিয়ে আসছিলেন। ঢাকার সরকারি এই সাতটি কলেজ ২০১৭ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত হয়, যার আগে এগুলো জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ছিল। কিন্তু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত হওয়ার পর শিক্ষা কার্যক্রমে নানা বৈষম্য ও জটিলতা নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে অসন্তোষ তৈরি হয়। ক্লাস পরিচালনা করতেন শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তারা এবং পরীক্ষার ব্যবস্থা করত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ, যা সমন্বয়হীনতার জন্ম দেয়।

এর পরিপ্রেক্ষিতে গত বছরের আগস্টে সরকার পরিবর্তনের পর শিক্ষার্থীরা আবারও জোরালো আন্দোলন শুরু করেন। আন্দোলনের মুখে চলতি বছরের জানুয়ারিতে কলেজগুলোকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্তি থেকে পৃথক করা হয় এবং একটি স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার।

অধ্যাদেশের খসড়ায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, উচ্চশিক্ষায় বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলা, আধুনিক জ্ঞানচর্চার প্রসার এবং সাত কলেজের স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থীদের শিক্ষার মান উন্নয়ন করা প্রয়োজন। যেহেতু সংসদ অধিবেশনে নেই, তাই সংবিধানের ৯৩(১) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাষ্ট্রপতির ক্ষমতাবলে এই অধ্যাদেশ জারি করা হয়েছে।