ফরাসি পররাষ্ট্রমন্ত্রী: তেল আবিবের নীতি ইসরায়েলিদের নিরাপত্তাকেই ঝুঁকিতে ফেলছে

ফরাসি পররাষ্ট্রমন্ত্রী জ্যঁ-নোয়েল বারো বলেছেন, ইসরায়েলি সরকারের বর্তমান নীতি তাদের নিজেদের জনগণকেই বিপন্ন করছে এবং জিম্মিদের মুক্তির চেষ্টায় বাধা সৃষ্টি করছে। তিনি তেল আবিবকে সতর্ক করে বলেছেন, অবরোধ অব্যাহত রাখলে এবং শান্তি প্রচেষ্টায় বাধা দিলে তাদের ইউরোপীয় নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়তে হতে পারে।

রবিবার সম্প্রচারমাধ্যম টিএফ১ ইনফোকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বারো বলেন, ইসরায়েলের নীতি সে দেশের নাগরিকদের নিরাপত্তাকে ঝুঁকির মুখে ফেলছে এবং জিম্মি মুক্তির পথে ‘বাধা’ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তিনি বলেন, ‘ইসরায়েলি সরকারের অংশগ্রহণ ছাড়া আমরা মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি বা স্থিতিশীলতা অর্জন করতে পারব না।’

বারো ইসরায়েলকে গাজার ওপর থেকে মানবিক অবরোধ তুলে নেওয়া, ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের ওপর আর্থিক চাপ বন্ধ করা এবং ওই অঞ্চল থেকে সংবাদমাধ্যমের কার্যক্রমের ওপর বিধিনিষেধ তুলে নেওয়ার আহ্বান জানান। তিনি আরও বলেন, ‘ইসরায়েলি সরকারকে অবশ্যই এসব মেনে চলতে হবে, অন্যথায় তারা ইউরোপীয় নিষেধাজ্ঞার ঝুঁকিতে পড়বে, যা আমরা সমর্থন করতে পারি।’

তিনি সতর্ক করে বলেন, একটি সুস্পষ্ট রাজনৈতিক পথ ছাড়া গাজার যুদ্ধ-পরবর্তী ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা করা ‘অবাস্তব’ হবে। বারো ব্যাখ্যা করেন, ‘প্রথম ধাপ হলো জিম্মিদের মুক্তি, যুদ্ধবিরতি এবং বিপুল পরিমাণে মানবিক সহায়তার প্রবেশ নিশ্চিত করা। দ্বিতীয় ধাপে থাকবে গাজায় একটি অন্তর্বর্তীকালীন প্রশাসন, ফিলিস্তিনি ও ইসরায়েলি উভয়ের নিরাপত্তা নিশ্চিতে একটি আন্তর্জাতিক স্থিতিশীলতা মিশন এবং জাতিসংঘের অনুমোদিত একটি আন্তর্জাতিক বাহিনীর মাধ্যমে হামাসকে নিরস্ত্র করা।’

‘আন্তর্জাতিক বাহিনীতে’ কোন কোন দেশ অবদান রাখবে জানতে চাইলে তিনি উত্তর দেন যে, ফ্রান্স এতে অবদান রাখবে, কিন্তু ‘ফ্রান্স হিসেবে সরাসরি ভূমিতে উপস্থিত থেকে নয়।’

ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল

জ্যঁ-নোয়েল বারো ইরানের ওপর জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালের বিষয়েও কথা বলেন। তিনি জানান, কূটনীতির দরজা এখনো খোলা আছে এবং ইরানের উচিত আলোচনা চালিয়ে যাওয়া। পারমাণবিক চুক্তি লঙ্ঘনের অভিযোগে ফ্রান্স, জার্মানি ও যুক্তরাজ্য এই নিষেধাজ্ঞা চালুর পদক্ষেপ নেয়। এক দশকের মধ্যে রবিবার প্রথমবারের মতো এই নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করা হলো। এর লক্ষ্য ইরানের পারমাণবিক ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির সঙ্গে সম্পর্কিত লেনদেন বন্ধ করা, যা দেশটির অর্থনীতিতে ব্যাপক প্রভাব ফেলবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ন্যাটো ভূখণ্ডে রুশ ড্রোন

পূর্ব ইউরোপে রুশ ড্রোনের কার্যকলাপ নিয়ে প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বারো ন্যাটো ভূখণ্ডে আরও লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে মস্কোকে সতর্ক করেছেন। তিনি বলেন, ‘রাশিয়ার সন্দেহ করা উচিত নয়। যুক্তরাষ্ট্রসহ ন্যাটো মিত্রদের সংকল্প অত্যন্ত দৃঢ় এবং ন্যাটোর আকাশসীমা বা ভূখণ্ড লঙ্ঘন বিনা শাস্তিতে পার পাবে না।’ ন্যাটো ড্রোন ভূপাতিত করবে কি না জানতে চাইলে বারো বলেন, এটি নতুন কোনো লঙ্ঘনের পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করবে। সম্প্রতি পোল্যান্ড, রোমানিয়া ও এস্তোনিয়াসহ ন্যাটোর বেশ কয়েকটি সদস্য দেশ রুশ ড্রোন বা আকাশসীমা লঙ্ঘনের অভিযোগ করেছে।