ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ১৫ স্পটে যানজটের শঙ্কা

দুর্গাপূজার ছুটিতে ঘরমুখো মানুষের যাত্রাপথে ভোগান্তির কারণ হতে পারে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের যানজট। বিশেষ করে মিরসরাইয়ের ধুমঘাট থেকে সীতাকুণ্ডের সিটি গেট পর্যন্ত প্রায় ৬০ কিলোমিটারজুড়ে ১৫টি স্থানকে যানজটের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। ছুটির কারণে সড়কে গাড়ির চাপ বাড়লে এই স্পটগুলোতে পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

মহাসড়কের এই অংশে যানজটের মূল কারণ হিসেবে সড়কের পাশে গড়ে ওঠা কনটেইনার ডিপো ও টার্মিনালগুলোকে দায়ী করা হচ্ছে। এসব ডিপোর পণ্যবাহী গাড়ি সড়কের ওপর অবৈধভাবে পার্কিং করায় যান চলাচলে মারাত্মক প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়। সরেজমিনে সীতাকুণ্ডের আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় কেডিএস লজিস্টিকের গাড়ি এবং ফোজদারহাট পোর্ট কানেকটিং রোডে বন্দর থেকে বের হওয়া যানবাহনকে সড়ক দখল করে রাখতে দেখা গেছে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে বড়দারোগাহাট এলাকার ওজন স্কেল, যা প্রায়ই দীর্ঘ যানজটের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

এছাড়াও মিরসরাই পৌর সদর, মিঠাছড়া বাজার, নিজামপুর বাজার, বড়তাকিয়া বাজার, শুকলালহাট ও বাড়বকুন্ডের মতো বিভিন্ন বাজার সড়কের ওপর বসায় যান চলাচল বাধাগ্রস্ত হয়। ঝুঁকিপূর্ণ স্পটগুলোর মধ্যে আরও রয়েছে বারইয়ারহাট দক্ষিণ ইউটার্ন, টোবাকো গেট, বিএমএ গেট, ভাটিয়ারি, বিএম কনটেইনার ডিপো এবং বাঁশবাড়িয়া। সড়কের সংস্কার কাজ এবং দুর্ঘটনা পরবর্তী গাড়ি সরাতে দেরি হওয়াও যানজটকে আরও দীর্ঘায়িত করে।

এই যানজটের কারণে যাত্রীদের ভোগান্তি চরমে পৌঁছেছে। চয়েস বাসের চালক জসীম উদ্দিন বলেন, ‘অবৈধ স্ট্যান্ড, ফুটপাত দখল করে দোকান এবং ডিপোর গাড়ি রাস্তায় দাঁড় করিয়ে রাখায় আমাদের যানজটে পড়তে হয়’। নিয়মিত যাত্রী মো. ওমর শরীফের মতে, চার লেন প্রকল্পের কোনো সুফলই পাওয়া যাচ্ছে না, বিশেষ করে সীতাকুণ্ড অংশে যানজট নিত্যদিনের ঘটনা। আরেক যাত্রী আকতার হোসেন নিরাপত্তার বিষয়টি তুলে ধরে বলেন, रात्रीকালে যানজটে আটকে পড়লে ছিনতাই-ডাকাতির ভয় থাকে, যে কারণে তিনি রাতে এই সড়ক এড়িয়ে চলেন।

যানজট পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে হাইওয়ে পুলিশ ও ট্রাফিক পুলিশ বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণের কথা জানিয়েছে। কুমিরা হাইওয়ে পুলিশের ইনচার্জ জাকির রাব্বানি জানান, তার দায়িত্বাধীন এলাকায়, বিশেষ করে সীতাকুণ্ড সদর ও বড়দারোগাহাট স্কেলে সার্বক্ষণিক পুলিশের টিম কাজ করবে।

চট্টগ্রাম জেলা ট্রাফিক পুলিশের টিআই রফিক আহমেদ মজুমদারও আশ্বাস দিয়ে বলেছেন, দুর্গাপূজার ছুটিতে যানজট নিরসনে মিরসরাই, জোরারগঞ্জ ও সীতাকুণ্ডের বিভিন্ন পয়েন্টে বিশেষ টিম মোতায়েন থাকবে। তিনি দাবি করেন, বন্দরের গাড়ি ও বিভিন্ন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের কারণে যানজট হলেও তা বেশিক্ষণ স্থায়ী হয় না। তবে প্রশাসনের এই আশ্বাস সত্ত্বেও সড়কের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় যাত্রীদের মধ্যে ভোগান্তির শঙ্কা কাটছে না।