খাগড়াছড়িতে সহিংসতা ঘটনায় তিন মামলা, আসামি ১১০০ জন

খাগড়াছড়ির গুইমারা উপজেলায় পাহাড়ি কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগ ঘিরে বিক্ষোভ ও সহিংসতার ঘটনায় চার দিন পর তিনটি মামলা করেছে পুলিশ। বুধবার (১ অক্টোবর) রাতে গুইমারা থানায় পুলিশ বাদী হয়ে মামলাগুলো দায়ে করে।

গুইমারা থানার (ওসি) মো. এনামুল হক চৌধুরী বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) সকালে গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, তিন মামলার মধ্যে একটি করা হয়েছে সরকারি কাজে বাধা, সরকারি কর্মচারীদের ওপর হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগে। এতে অজ্ঞাত ৩০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

আরেকটি মামলা হয়েছে হত্যার অভিযোগে, যেখানে নিহতদের পরিবারের কেউ বাদী হতে রাজি না হওয়ায় পুলিশই মামলা করেছে। এ মামলাতেও অজ্ঞাত আসামি রয়েছে।

অন্যদিকে খাগড়াছড়ি সদরে ১৪৪ ধারা ভেঙে সহিংসতা ও সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে আরও একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এতে অজ্ঞাত ৮০০ জনকে আসামি করা হয়েছে বলে ওসি জানান।

খাগড়াছড়ির গুইমারা ও সদর উপজেলায় এখনো ১৪৪ ধারা বহাল রয়েছে। তবে বৃহস্পতিবার সকালে যানবাহন চলাচল ও জনজীবন স্বাভাবিক হতে দেখা গেছে।

সাপ্তাহিক হাটে মানুষের ভিড়ও লক্ষ্য করা গেছে। জেলা প্রশাসক এ বি এম ইফতেখারুল ইসলাম খন্দকার জানিয়েছেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক মনে হলেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সন্তুষ্ট হলে ১৪৪ ধারা প্রত্যাহার করা হবে।

গত ২৪ সেপ্টেম্বর রাতে খাগড়াছড়িতে এক পাহাড়ি কিশোরীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। স্বজনেরা অচেতন অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন। এ ঘটনায় শয়ন শীল নামের একজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তবে মেডিকেল বোর্ডের প্রতিবেদনে ওই কিশোরীর দেহে ধর্ষণের আলামত পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে কিশোরীর বাবা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

ধর্ষণের অভিযোগ ঘিরে জুম্ম ছাত্র-জনতার ব্যানারে ২৮ সেপ্টেম্বর খাগড়াছড়িতে অবরোধ কর্মসূচি পালিত হয়। পরদিন তিন পার্বত্য জেলায়ও অবরোধের ডাক দেওয়া হয়। এই পরিস্থিতিতে ২৯ সেপ্টেম্বর গুইমারার রামেসু বাজার এলাকায় সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও অবরোধকারীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়, যেখানে স্থানীয় একটি পক্ষও যোগ দেয়। গুলিতে পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর তিনজন নিহত হন। আহত হন সেনাবাহিনীর এক মেজরসহ অন্তত ২০ জন। আগুন দেওয়া হয় প্রায় অর্ধশত বসতবাড়ি ও ৪০টির মতো দোকানে।