বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ: ভালো ঘুমের জন্য খান এই তিন ফল

অনেকেই ঘুমের সমস্যায় ভুগছেন, আর এর সহজ সমাধান মিলতে পারে ফলের দোকানেই। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নির্দিষ্ট কিছু ফল প্রাকৃতিক হরমোন ও খনিজে পরিপূর্ণ হওয়ায় তা দ্রুত ঘুম আনতে এবং ঘুমের মান উন্নত করতে সাহায্য করে।

বোর্ড-প্রত্যয়িত পুষ্টিবিদ ক্যান্ডাল ম্যাকিনটোশ ফক্স নিউজ ডিজিটালকে জানান, এমন কিছু ফল রয়েছে যা মেলাটোনিন ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে সমৃদ্ধ। এগুলো আমাদের দেহঘড়ি নিয়ন্ত্রণ করে এবং রাতে কোষের পুনর্গঠনে সাহায্য করে। তিনি আরও বলেন, ‘শরৎকালে যখন দিন ছোট হয়ে আসে এবং প্রাকৃতিক আলোর পরিমাণ কমে যায়, তখন ঘুম, মেজাজ এবং বিপাকক্রিয়ার জন্য স্বাভাবিকভাবে মেলাটোনিন গ্রহণ করা আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে।’

যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি)-এর তথ্য অনুযায়ী, ২০২০ সালে দেশটির প্রায় ১৪.৫ শতাংশ নাগরিক ‘প্রতিদিন বা বেশিরভাগ দিন’ ঘুমাতে সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন।

টার্ট চেরি

ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিকের মতে, টার্ট চেরি শরীরে মেলাটোনিনের পরিমাণ বাড়িয়ে ঘুম আনতে সাহায্য করে। মেলাটোনিন মস্তিষ্কে তৈরি হওয়া একটি প্রাকৃতিক হরমোন যা আমাদের ঘুম-জাগরণের চক্র নিয়ন্ত্রণ করে। চেরিতে ট্রিপটোফ্যান নামক অ্যামিনো অ্যাসিডও রয়েছে, যা সেরোটোনিন ও মেলাটোনিন তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। ঘুমের জন্য মন্টমোরেন্সি জাতের চেরি খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, যা তার টক স্বাদের জন্য পরিচিত।

কিউই ফল

ক্যান্ডাল ম্যাকিনটোশ কিউই ফলকেও ঘুমের জন্য সহায়ক বলে উল্লেখ করেছেন। ন্যাশনাল লাইব্রেরি অব মেডিসিনে ২০২৪ সালে প্রকাশিত একটি গবেষণায় দেখা গেছে, কিউই ফল খাওয়ার ফলে ঘুমের মান ও সময় দুটোই উল্লেখযোগ্যভাবে উন্নত হয়েছে। চার সপ্তাহব্যাপী এই গবেষণাটি শীর্ষস্থানীয় ক্রীড়াবিদদের ওপর চালানো হয়েছিল।

আঙুর

ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিকের নিবন্ধিত পুষ্টিবিদ অ্যান্থনি ডিমারিনো জানিয়েছেন, আঙুর ঘুমের জন্য ভালো হতে পারে। তিনি বলেন, ‘আঙুরে কিছুটা মেলাটোনিন থাকে। তাই এটি সন্ধ্যার নাস্তা হিসেবে দারুণ। এতে ক্যালরিও কম এবং এটি আপনাকে ঘুমাতে সাহায্য করতে পারে।’ তবে তিনি আঙুরের রস বা কিশমিশের পরিবর্তে তাজা ও অপ্রক্রিয়াজাত ফল খাওয়ার ওপর জোর দিয়েছেন, কারণ এতেই সবচেয়ে বেশি পুষ্টিগুণ পাওয়া যায়।

খাদ্যাভ্যাসের পাশাপাশি জীবনযাত্রার পরিবর্তনের গুরুত্বও তুলে ধরেছেন বিশেষজ্ঞরা। সন্ধ্যার পর পর্দার নীল আলোর প্রভাব কমানো এবং শোবার ঘর ঠান্ডা ও অন্ধকার রাখার মতো অভ্যাসগুলোও ভালো ঘুমের জন্য জরুরি।