শর্ত ও আপত্তির বেড়াজালে বহুল প্রতীক্ষিত জুলাই সনদ

নানা জল্পনা-কল্পনা এবং রাজনৈতিক দলগুলোর শর্ত আর আপত্তির মধ্যেই আজ শুক্রবার অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বহুল প্রতীক্ষিত ‘জুলাই সনদ’ সই অনুষ্ঠান। জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস উপস্থিত থাকবেন। তবে ঐতিহাসিক এই মুহূর্তের আগে কয়েকটি রাজনৈতিক দলের অবস্থান ঘিরে তৈরি হয়েছে দ্বিধা।

বিএনপির পক্ষ থেকে সনদে সই করার বিষয়ে শর্তারোপ করা হয়েছে। দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানিয়েছেন, তাদের দেওয়া ‘নোট অব ডিসেন্ট’ যুক্ত করা হলেই কেবল তারা সনদে সই করবেন।

অন্যদিকে, চারটি বামপন্থী দল—বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ), বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল (বাংলাদেশ জাসদ) এবং বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ (মার্কসবাদী)—চার মূলনীতি বহাল না রাখাসহ বিভিন্ন কারণে সনদে সই না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বৃহস্পতিবার মুক্তি ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে তারা তাদের সম্মিলিত অবস্থান পরিষ্কার করে।

সনদের আইনি ভিত্তির প্রশ্ন তুলেছে আরও কয়েকটি দল। জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) জানিয়েছে, আইনি ভিত্তি ছাড়া তারা এতে সই করতে আগ্রহী নয়। একই ধরনের অবস্থান জামায়াতে ইসলামীরও। দলটি সনদের আইনি ভিত্তি নিশ্চিত করার দাবি জানিয়ে নভেম্বরে গণভোটের প্রস্তাব দিয়েছে।

এসব ভিন্নমত সত্ত্বেও জাতীয় ঐকমত্য কমিশন একটি উৎসবমুখর পরিবেশ আশা করছে। বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজ জানান, সনদ সই অনুষ্ঠানের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। তিনি মনে করেন, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বিভিন্ন বিষয়ে ভিন্নমত থাকলেও জুলাই সনদের প্রশ্নে সবার এক হওয়া উচিত।

আলী রীয়াজ আরও নিশ্চিত করেছেন, কোনো দল শুক্রবার সই করতে না পারলেও তাদের জন্য সুযোগ থাকছে। কমিশনের মেয়াদ থাকা পর্যন্ত, অর্থাৎ ৩১ অক্টোবরের মধ্যে যেকোনো দিন তারা সই করতে পারবেন। এদিকে, পুরো অনুষ্ঠানটি বিটিভিসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে সরাসরি সম্প্রচার করা হবে এবং প্রধান উপদেষ্টা অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।