আসিফ নজরুল: বিএনপি তত্ত্বাবধায়ক নয়, নিরপেক্ষ অন্তর্বর্তী সরকার চায়

বিএনপি তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের দাবি করেনি, বরং অন্তর্বর্তী সরকারের নিরপেক্ষ ভূমিকা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছে বলে জানিয়েছেন আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল। বুধবার (২২ অক্টোবর) দুপুরে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ মন্তব্য করেন।

গতকাল মঙ্গলবার বিএনপির তিন সদস্যের প্রতিনিধিদল প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে অন্তর্বর্তী সরকারকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মতো নিরপেক্ষ ভূমিকা পালনের আহ্বান জানিয়েছিল।

এ সময় তারা সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে থাকা দলঘনিষ্ঠ সদস্যদের বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়ারও অনুরোধ জানায়।

এ প্রসঙ্গে আসিফ নজরুল বলেন, উনারা (বিএনপি) চেয়েছেন, ইন্টারিম (অন্তর্বর্তী) সরকার যেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মতো ভূমিকা পালন করে। আমরা উনাদের বলেছি, আমরা নিরপেক্ষ ভূমিকাই পালন করছি। প্রধান উপদেষ্টা আশ্বস্ত করেছেন যে বড় ধরনের বদলি বা নিয়োগের সিদ্ধান্ত তিনি নিজে দেখবেন।

তিনি আরও বলেন, বিএনপি তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের কথা বলেনি, বরং চেয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার যেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মতো আচরণ করে।

নির্বাচনকালীন সরকার পরিবর্তন বা পুনর্গঠনের কোনো আলোচনা হয়নি বলে নিশ্চিত করেছেন আইন উপদেষ্টা।
এটা উপদেষ্টা পরিষদে আলোচনার বিষয়। নির্বাচনকালীন সরকার ছোট হবে, না কেমন হবে, এ ধরনের কোনো দাবিও কেউ উত্থাপন করেনি, বলেন আসিফ নজরুল।

উপদেষ্টা পরিষদে দলীয় ঘনিষ্ঠ কেউ থাকলে তাদের অপসারণের বিষয়ে বিএনপির প্রস্তাব সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তারা এর আগেও এ কথা বলেছে। এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য নেই। সিদ্ধান্ত নেবেন প্রধান উপদেষ্টা।

সরকারের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্নের জবাবে আসিফ নজরুল বলেন, আমাদের বিরুদ্ধে সব দলই অভিযোগ করে, এক দল বলে ওই দলের লোক আছে, আরেক দল বলে ওই দলের লোক আছে। এর মানে আমরা নিরপেক্ষভাবেই দায়িত্ব পালন করছি।

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে জড়িত অভিযোগে অভিযুক্ত সেনা কর্মকর্তাদের ট্রাইব্যুনালে হাজির করতে সেনাবাহিনীর সহযোগিতার বিষয়টিও প্রশংসা করেন আইন উপদেষ্টা।

বিচারপ্রক্রিয়ার প্রতি শ্রদ্ধা দেখিয়ে সেনা কর্মকর্তাদের আদালতে হাজির করা হয়েছে। সেনাপ্রধান ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা যে সহযোগিতা করেছেন, সেটি প্রশংসার দাবিদার, বলেন তিনি।

অভিযুক্ত সেনা কর্মকর্তাদের সেনানিবাসের সাবজেলে রাখার বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটি সম্পূর্ণ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিষয়। প্রয়োজন ও যুক্তি অনুযায়ী তারা যেটি উপযুক্ত মনে করবেন, সেটিই করবেন।

আগামী ফেব্রুয়ারির নির্বাচন নিয়ে আস্থার অভাব আছে কি না এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, এ বিষয়ে নিশ্চিত করে বলা কঠিন। রাজনৈতিক দলগুলোর পারস্পরিক অবিশ্বাসই হয়তো আস্থার ঘাটতির কারণ। তবে জুলাই সনদের বাস্তবায়নে দৃশ্যমান অগ্রগতি দেখা গেলে এই সংশয় অনেকটাই দূর হবে।