জেলেনস্কি: যুদ্ধ থামাতে ইউরোপের কোনো পরিকল্পনা আমি দেখিনি

ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি জানিয়েছেন, যুদ্ধ অবসানে ইউরোপের কোনো সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা তিনি দেখেননি, যদিও এই মহাদেশের বেশ কয়েকটি দেশ শান্তিপূর্ণ সমাধানের প্রস্তাব দিয়েছে। সোমবার এক ব্রিফিংয়ে তিনি আরও বলেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বা ইউরোপীয় নেতারা কেউই এখন পর্যন্ত রাশিয়াকে সরাসরি আলোচনায় বসতে বাধ্য করতে পারেননি।

ইন্টারফ্যাক্স-ইউক্রেন সংবাদ সংস্থার প্রতিবেদন অনুযায়ী, জেলেনস্কি বলেন, ‘এই বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হলো, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট হিসেবে আমি কি এই পরিকল্পনা দেখেছি? উত্তর হচ্ছে, না। শান্তিপূর্ণ সমাধানের জন্য ইউরোপের বিভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি ও প্রস্তাব রয়েছে।’

জানুয়ারিতে দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইউক্রেনের যুদ্ধ বন্ধের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তিনি আগস্টে আলাস্কায় রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং পরবর্তীতে জেলেনস্কিকে অন্তর্ভুক্ত করে একটি ত্রিপাক্ষিক বৈঠকের ধারণা দেন। তবে রাশিয়া জানিয়েছে, পুতিন ও জেলেনস্কির মধ্যে বৈঠকের জন্য বিশদ প্রস্তুতি প্রয়োজন এবং এর একটি সুনির্দিষ্ট ফলাফল থাকতে হবে। ট্রাম্প ও পুতিনের মধ্যে বুদাপেস্টে একটি নতুন শীর্ষ সম্মেলন হওয়ার কথা থাকলেও তা সফল হয়নি।

জেলেনস্কি বলেন, ‘উপদেষ্টা পর্যায়ে আলোচনা চলছে, তবে চূড়ান্ত কোনো পরিকল্পনা এখনো আলোচনার টেবিলে নেই।’ তিনি আরও যোগ করেন, যদি ইউরোপের সঙ্গে কোনো পরিকল্পনা তৈরি হয়, তবে ইউক্রেন তা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা করবে, কারণ আমেরিকানদেরও নিজস্ব ভাবনা রয়েছে।

ইউরোপীয় শান্তি পরিকল্পনার বিস্তারিত বিবরণ তেমন পাওয়া না গেলেও জানা গেছে, এতে বর্তমান রণাঙ্গনের ওপর ভিত্তি করে যুদ্ধবিরতি এবং পরবর্তীতে যুদ্ধ শেষ করার জন্য আলোচনার প্রস্তাব অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

একই সঙ্গে জেলেনস্কি ঘোষণা করেন যে, ড্রোন উৎপাদন চুক্তি নিয়ে আলোচনার জন্য আগামী সপ্তাহে একটি মার্কিন প্রতিনিধি দল ইউক্রেন সফর করবে। তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের ড্রোন চুক্তি বিষয়ক দলটি আগামী সপ্তাহে ইউক্রেনে আসবে।’ কৌশলগত উপদেষ্টা ওলেকসান্দ্র কামিশিন ইউরোপজুড়ে ইউক্রেনের রপ্তানির প্রতিনিধিত্ব করবেন এবং জাতীয় নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা পরিষদের সচিব রুস্তেম উমেরভ মধ্যপ্রাচ্য ও এশিয়ায় দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক দেখভাল করবেন।

প্রেসিডেন্ট আরও জানান, গ্যাস আমদানির জন্য প্রয়োজনীয় ২০০ কোটি ডলারের মধ্যে এখনো ৭৫ কোটি ডলারের ঘাটতি রয়েছে, তবে ইউক্রেন ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে অতিরিক্ত ১২.৭ কোটি ইউরো সহায়তা পাবে। তিনি যোগ করেন, জ্বালানি খাতে সহায়তা সমন্বয়ের জন্য ইউক্রেন বিশ্বনেতাদের সঙ্গে নিয়মিত ভার্চুয়াল বৈঠক চালিয়ে যাবে এবং পরবর্তী বৈঠক এক সপ্তাহ পরেই অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।