সাবেক ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে জার্মানিতে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ

সাবেক ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী এহুদ ওলমার্টের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে জার্মানিতে একটি ফৌজদারি মামলা করেছে হিন্দ রজব ফাউন্ডেশন। ২০০৮-২০০৯ সালে গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের চালানো ‘অপারেশন কাস্ট লিড’ নামক সামরিক আগ্রাসনের জন্য এই অভিযোগ আনা হয়। বুধবার এক বিবৃতিতে সংস্থাটি এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।

ফাউন্ডেশনটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, জার্মান আইনজীবী মেলানি শোয়েইজার বার্লিনের পাবলিক প্রসিকিউটর অফিস এবং কার্লসরুহের ফেডারেল প্রসিকিউটর জেনারেলের দপ্তরে অভিযোগটি জমা দিয়েছেন। জার্মানির আন্তর্জাতিক আইন কোডের অধীনে এই অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে, যা আন্তর্জাতিক অপরাধ নিষ্পত্তিতে সহায়তা করে। আগামী ৬ নভেম্বর বার্লিনে অনুষ্ঠিতব্য ‘হারেৎজ ডেমোক্রেসি কনফারেন্সে’ ওলমার্টের যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে।

ফাউন্ডেশনের অভিযোগে বলা হয়েছে, ২০০৬ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী হিসেবে গাজায় ইসরায়েলি সামরিক অভিযানের চূড়ান্ত দায় এহুদ ওলমার্টের ওপর বর্তায়। ওই অভিযানে ৩০০-এর বেশি শিশুসহ ১,৩০০ জনের অধিক ফিলিস্তিনি নিহত এবং বেসামরিক অবকাঠামোর ব্যাপক ক্ষতি হয়েছিল। এর আগে জাতিসংঘের ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং মিশন (গোল্ডস্টোন রিপোর্ট), অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এবং হিউম্যান রাইটস ওয়াচের মতো মানবাধিকার সংস্থাগুলো এই সংঘাতে বেআইনি হামলা, জনবহুল এলাকায় সাদা ফসফরাস ব্যবহার এবং মানবিক সহায়তায় বাধা দেওয়ার মতো অভিযোগ নথিভুক্ত করেছিল।

‘কমান্ড রেসপন্সিবিলিটি’ বা নেতৃত্বের দায়বদ্ধতার নীতির ওপর ভিত্তি করে অভিযোগে বলা হয়েছে, ওলমার্ট যুদ্ধাপরাধ ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের অনুমোদন দিয়েছেন, তা প্রতিরোধে ব্যর্থ হয়েছেন অথবা এসব অপরাধের বিচার নিশ্চিত করেননি। ফাউন্ডেশনটি জার্মান কর্তৃপক্ষকে দ্রুত একটি তদন্ত শুরু করার, ওলমার্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করার এবং তাকে দেশ ত্যাগ করতে বাধা দেওয়ার জন্য আহ্বান জানিয়েছে।

জার্মান আইন অনুযায়ী, গুরুতর আন্তর্জাতিক অপরাধ বিশ্বের যেখানেই সংঘটিত হোক বা সন্দেহভাজনদের জাতীয়তা যা-ই হোক না কেন, দেশটির আদালত সেগুলোর বিচার করার এখতিয়ার রাখে।

হিন্দ রজব ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক দিয়াব আবু জাহজাহ বলেন, ‘গাজার ভুক্তভোগীদের বিচার পাওয়ার অধিকার আছে, যতই সময় পেরিয়ে যাক না কেন। যুদ্ধাপরাধের জন্য যারা দায়ী, তাদের অবশ্যই জানতে হবে যে জবাবদিহিতার কোনো নির্দিষ্ট মেয়াদ নেই এবং দায়মুক্তি থেকে পার পাওয়ার সুযোগ ক্রমশ সংকুচিত হয়ে আসছে।’