নির্বাচনকে সামনে রেখে ২৯ জেলায় নতুন ডিসি, ২১ জনই নতুন মুখ

আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্রশাসনে একটি বড় রদবদল করা হয়েছে। সরকার দুই দিনে মোট ২৯টি জেলায় নতুন জেলা প্রশাসক (ডিসি) নিয়োগ দিয়েছে। এর মধ্যে ২১ জন কর্মকর্তা প্রথমবারের মতো ডিসি হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন এবং বাকি ৮ জনকে এক জেলা থেকে অন্য জেলায় বদলি করা হয়েছে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় শনিবার ১৫ জেলা এবং রোববার ১৪ জেলায় এই নিয়োগ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করে।

আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির শুরুতে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। নির্বাচনকালীন সময়ে জেলা প্রশাসকরা রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করেন বলে তাদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। যদিও নির্বাচন কমিশন এবার ডিসিদের এই দায়িত্ব দেবে কি না, সে বিষয়ে এখনও কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানায়নি। তবে নির্বাচনকে কেন্দ্র করেই যে এই বড় ধরনের রদবদল করা হয়েছে, তা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একাধিক কর্মকর্তা নিশ্চিত করেছেন।

এই রদবদলের মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ঘটনা হলো ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় প্রথম নারী জেলা প্রশাসক হিসেবে শারমিন আক্তার জাহানের নিয়োগ। ১৯৮৪ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি জেলা হিসেবে প্রতিষ্ঠার পর এই প্রথম কোনো নারী এই পদে আসীন হলেন। এর আগে তিনি নড়াইলের জেলা প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে নারী শিক্ষার প্রসার এবং উদ্যোক্তা উন্নয়নে ভূমিকার জন্য প্রশংসা অর্জন করেন। সচেতন নাগরিক কমিটির (সনাক) সভাপতি অ্যাডভোকেট আবদুন নূর এই নিয়োগকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, ‘নতুন ডিসি জনগণের কাঙ্ক্ষিত সেবা প্রদানে অগ্রণী ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবেন বলে আশা করছি।’। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বর্তমান জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ দিদারুল আলমকে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা অধিদপ্তরের উপসচিব পদে বদলি করা হয়েছে।

বদলি হওয়া অন্য কর্মকর্তাদের মধ্যে বাগেরহাটের ডিসি আহমেদ কামরুল হাসানকে নোয়াখালী, কুষ্টিয়ার আবু হাসনাত মোহাম্মদ আরেফীনকে হবিগঞ্জ, ভোলার মো. আজাদ জাহানকে গাজীপুর এবং বরগুনার মোহাম্মদ শফিউল আলমকে ঢাকার ডিসি করা হয়েছে। এছাড়া সিরাজগঞ্জের মুহাম্মদ নজরুল ইসলামকে গাইবান্ধা, খুলনার মো. তৌফিকুর রহমানকে বগুড়া এবং মেহেরপুরের মোহাম্মদ আব্দুল ছালামকে নড়াইলের ডিসি হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত ২১ জন কর্মকর্তার মধ্যে রয়েছেন: সন্দ্বীপ কুমার সিংহ (বরগুনা), মো. আমিনুল ইসলাম (সিরাজগঞ্জ), মো. আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ (মাগুরা), আবু সাঈদ (পিরোজপুর), আফরোজা আখতার (সাতক্ষীরা), গোলাম মো. বাতেন (বাগেরহাট), স. ম. জামশেদ খোন্দকার (খুলনা), মো. ইকবাল হোসেন (কুষ্টিয়া) এবং ডা. শামীম রহমান (ভোলা)।

অন্যান্য নতুন ডিসিরা হলেন মো. আব্দুল্লাহ আল মাসউদ (ঝিনাইদহ), মো. ইউসুপ আলী (জামালপুর), লুৎফুন নাহার (মেহেরপুর), মোহাম্মদ আসলাম মোল্লা (কিশোরগঞ্জ), মো. মমিন উদ্দিন (ঝালকাঠি), মো. আরিফ-উজ-জামান (গোপালগঞ্জ), মোহাম্মদ কামাল হোসেন (চুয়াডাঙ্গা), কাজী মো. সায়েমুজ্জামান (পঞ্চগড়), মো. আল-মামুন মিয়া (জয়পুরহাট), মো. সাইফুর রহমান (ময়মনসিংহ), নাজমুন আরা সুলতানা (মানিকগঞ্জ) এবং মো. নাজমুল ইসলাম সরকার (চাঁদপুর)।