ভুয়া ও এআই দ্বারা তৈরি ভুল তথ্য রোধে অ্যাপ চালুর পরিকল্পনা ইসির

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভুয়া তথ্য, গুজব ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) দ্বারা তৈরি বিভ্রান্তিকর কনটেন্ট মোকাবিলায় একটি বিশেষ অ্যাপ চালুর উদ্যোগ নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

২০ অক্টোবর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে আয়োজিত এক বৈঠকের কার্যবিবরণীতে এ প্রস্তাব অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যা রবিবার (৯ নভেম্বর) সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও সংস্থাগুলোর কাছে পাঠানো হয়।

কার্যবিবরণী অনুযায়ী, বৈঠকে অংশগ্রহণকারীরা নির্বাচনের সময় ভুয়া তথ্য ও এআই-নির্ভর বিভ্রান্তিকর কনটেন্ট ছড়ানোর ঝুঁকিকে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন।

অতিরিক্ত আইজিপি (সিআইডি) মো. ছিবগাত উল্লাহ বৈঠকে বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও এআই দ্বারা তৈরি তথ্যের মাধ্যমে নির্বাচনী সময়ে গুজব ছড়ানোর আশঙ্কা রয়েছে।

তিনি বলেন, ইতোমধ্যে এ ধরনের একাধিক কনটেন্ট শনাক্ত করা হয়েছে এবং র‍্যাবের সাইবার ইউনিট এ বিষয়ে কাজ করছে।

এ সময় জাতীয় টেলিযোগাযোগ পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের (এনটিএমসি) সদ্য অবসরপ্রাপ্ত মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবদুল কাইয়ুম মোল্লা জানান, সংস্থাটি দুর্গাপূজা উপলক্ষে গুজব প্রতিরোধে ব্যবহৃত অ্যাপের মতো একটি নতুন অ্যাপ তৈরি করতে প্রস্তুত রয়েছে। ওই ব্যবস্থার মাধ্যমে ইতিবাচক ফল পাওয়া গেছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

অন্যদিকে, প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা অধিদপ্তরের (ডিজিএফআই) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল জাহাঙ্গীর আলম বৈঠকে বলেন, ভুয়া তথ্য ও গুজব নির্বাচনী নিরাপত্তার জন্য বড় উদ্বেগের বিষয়। মাঠপর্যায়ের গোয়েন্দা তথ্য নিয়মিতভাবে ইসি ও সংশ্লিষ্ট সংস্থার সঙ্গে ভাগাভাগি করা হবে।

তিনি আরও বলেন, গুজব ছড়ানোর আগে দ্রুত সঠিক তথ্য প্রচার করাই হবে সবচেয়ে কার্যকর কৌশল। পাশাপাশি তিনি সংকটকালে কারা তথ্য প্রদান করবেন এবং কারা মাঠপর্যায়ে সমন্বয় করবেন, তা নির্দিষ্ট করে একটি ‘মিডিয়া রেসপন্স পলিসি’ প্রণয়নের পরামর্শ দেন।

বৈঠকের কার্যবিবরণীতে আরও বলা হয়, নির্বাচন কমিশনের প্রযুক্তিগত সক্ষমতা বৃদ্ধি, ডিজিটাল টুল ব্যবহারের দক্ষতা বাড়ানো এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম পর্যবেক্ষণের জন্য বিশেষ পরিকল্পনা নেওয়ার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

এ ছাড়া নিয়মিতভাবে গণমাধ্যমকে ব্রিফ করার মাধ্যমে ভুয়া তথ্য ও গুজব প্রতিরোধেরও সুপারিশ করা হয়।

বৈঠকটি প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়। এতে নির্বাচন কমিশনারগণ, ইসি সচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তা এবং গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধিরা অংশ নেন।