আওয়ামী লীগের ‘ঢাকা লকডাউন’ প্রতিরোধে মাঠে নামবে জামায়াত-বিএনপি

আগামী ১৩ নভেম্বর নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের ঘোষিত ‘ঢাকা লকডাউন’ কর্মসূচির বিরোধিতা করে প্রতিরোধে নামার ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, বিএনপি ও জামায়াতের ছাত্র সংগঠনসহ তাদের রাজনৈতিক মিত্ররা। ওই দিন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে (আইসিটি) সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার ঘনিষ্ঠ কয়েকজন সাবেক সহযোগীর মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার রায় ঘোষণার তারিখ নির্ধারণ হওয়ার কথা রয়েছে।

জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আহসানুল মাহবুব জুবায়ের টিবিএসকে বলেন, জনগণ ইতিমধ্যেই আওয়ামী লীগকে প্রত্যাখ্যান করেছে। গত বছর ৫ আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে স্বৈরশাসন পতন হয়েছে। যারা জনগণের রোষে দেশ ছেড়ে পালিয়েছে, তাদের আবার বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির সুযোগ দেওয়া হবে না।

তিনি আরও বলেন, জনগণের সঙ্গে থেকেই যেকোনো ষড়যন্ত্র প্রতিহত করা হবে।

একইভাবে খেলাফত মজলিসের যুগ্ম সদস্যসচিব আবদুল জলিল বলেন, মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার রায় আইনানুগভাবেই এগোনো উচিত। আওয়ামী লীগের এ বিষয়ে রাজনৈতিক বা নৈতিক কোনো অবস্থান নেই। তাদের কথিত ‘ঢাকা লকডাউন’ ফেসবুকের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে, হয়তো কিছু ভিডিও পোস্ট করবে, কিন্তু বাস্তবে জনগণ তাদের প্রত্যাখ্যান করেছে।

বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টির (বিডিপি) চেয়ারম্যান এ কে এম আনোয়ারুল ইসলাম চাঁন বলেন, আওয়ামী লীগের এখন সংগঠনগত কিংবা জনসমর্থনের শক্তি নেই। তারা সীমিত আকারে বা অনলাইনে কিছু করতে পারে, কিন্তু রাজনৈতিক শক্তি প্রদর্শনের মতো পরিস্থিতি দেশে নেই।

অন্যদিকে বিএনপির ছাত্র সংগঠন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল জানিয়েছে, আওয়ামী লীগের যেকোনো বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির প্রচেষ্টা রুখে দেওয়া হবে। সংগঠনের একাধিক সূত্র জানায়, এ বিষয়ে সোমবার (১০ নভেম্বর) অভ্যন্তরীণ বৈঠকে করণীয় নির্ধারণ করা হবে।

ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন নাসির বলেন, আওয়ামী লীগ দেড় বছর ধরে রাস্তায় নেই। জনগণ ও ছাত্র আন্দোলনের শক্তিতেই তাদের সহিংস রাজনীতি পরাজিত হয়েছে। এবারও ১৩ নভেম্বর তাদের বিশৃঙ্খলার প্রচেষ্টা প্রতিহত করা হবে।

তিনি আরও বলেন, জননিরাপত্তা রক্ষায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকেই দায়িত্ব নিতে হবে।

ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংগঠনিক সম্পাদক আমানউল্লাহ আমান বলেন, শুধু ছাত্রদল নয়, সব গণতান্ত্রিক ও ফ্যাসিবাদবিরোধী শক্তি একসঙ্গে প্রতিরোধে নামবে। আওয়ামী লীগের ১৩ নভেম্বরের ঘোষণা বাস্তবে রূপ নেবে না।

এদিকে ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম বলেন, তারা ওই দিন নিজস্ব কর্মসূচিও বিবেচনা করছে, পাশাপাশি প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় রেখেই কার্যক্রম চালাবে।

আমরা নিশ্চিত করতে চাই, আওয়ামী লীগ যেন বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে না পারে, বলেন তিনি।

এছাড়া জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুগ্ম সম্পাদক মুশফিক উস সালেহীন বলেন, বিদেশ থেকে পতিত স্বৈরশাসকদের প্রচারিত গুজবই ‘ঢাকা লকডাউন’ নামের নাটক। সরকার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সক্ষম।

তিনি যোগ করে বলেন, আওয়ামী লীগ যদি কোনো অপতৎপরতা চালায়, জনগণ ও আমরা রাস্তায় থেকেই তা প্রতিহত করব।