১০ম গ্রেডের প্রস্তাব পে কমিশনে, কর্মবিরতি প্রত্যাহার

অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে দাবি পূরণের আশ্বাস পেয়ে চলমান আন্দোলন স্থগিত করেছেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা। তিন দফা দাবি নিয়ে কয়েকদিন ধরে চলমান কর্মসূচির পর মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) থেকে তারা শ্রেণিকক্ষে ফেরার ঘোষণা দিয়েছেন। সোমবার (১০ নভেম্বর) অর্থ মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকের পর এই সিদ্ধান্ত আসে।

আন্দোলনরত শিক্ষকদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকে অর্থ বিভাগের সচিব ড. মো. খায়রুজ্জামান মজুমদার জানান, সহকারী শিক্ষকদের বেতন ১৩তম গ্রেড থেকে ১০ম গ্রেডে উন্নীত করার একটি প্রস্তাব বিবেচনার জন্য জাতীয় পে কমিশন ২০২৫-এ পাঠানো হয়েছে। কমিশনের সুপারিশ পাওয়ার পর অর্থ বিভাগ এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। বৈঠকে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের পাশাপাশি প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদ এবং প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সংগঠন ঐক্য পরিষদের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

শিক্ষকদের অপর দুটি দাবির বিষয়েও বৈঠকে আলোচনা হয়। চাকরির মেয়াদ অনুযায়ী উচ্চতর গ্রেড পাওয়ার জটিলতা নিরসনের বিষয়ে অর্থসচিব জানান, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব পেলে অর্থ বিভাগ তা পর্যালোচনা করবে। এছাড়া, সহকারী শিক্ষক থেকে প্রধান শিক্ষক পদে শতভাগ বিভাগীয় পদোন্নতির বিষয়টি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বিধিমালা অনুযায়ী প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সমাধান করবে বলে জানানো হয়।

বৈঠক শেষে প্রাথমিক শিক্ষক ঐক্য পরিষদের মুখপাত্র খায়রুন নাহার লিপি আন্দোলন স্থগিতের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় একটি লিখিত বিবৃতির মাধ্যমে তাদের আশ্বাস দিয়েছে। তিনি বলেন, ‘যেহেতু প্রাথমিক শিক্ষকদের ১১তম গ্রেড বিষয়ে মন্ত্রণালয় একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে, আমরা এটিকেই প্রজ্ঞাপন হিসেবে ধরে নিচ্ছি। এটি আমাদের প্রাথমিক বিজয়। আমরা মন্ত্রণালয়ের আশ্বাসে আস্থা রেখে সব কর্মসূচি প্রত্যাহার করছি এবং শ্রেণিকক্ষে ফিরে যাচ্ছি।’

এর আগে গত শনিবার (৮ নভেম্বর) রাজধানীর শাহবাগে ‘কলম বিসর্জন’ কর্মসূচি পালন করতে গেলে শিক্ষকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড, টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট ব্যবহার করলে বহু শিক্ষক আহত হন। এরপর থেকে শিক্ষকরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও শহীদ মিনার এলাকায় অবস্থান নিয়ে কর্মবিরতি চালিয়ে যাচ্ছিলেন।

শিক্ষকদের প্রধান তিনটি দাবি ছিল:

১. সহকারী শিক্ষকদের জন্য ১০ম গ্রেডে বেতন নির্ধারণ।
২. চাকরির ১০ ও ১৬ বছর পূর্তিতে উচ্চতর গ্রেড পাওয়ার জটিলতার স্থায়ী অবসান।
৩. সহকারী শিক্ষক থেকে প্রধান শিক্ষক পদে শতভাগ বিভাগীয় পদোন্নতির নিশ্চয়তা।