ইউক্রেনে ১০০ মিলিয়ন ডলার দুর্নীতি: দেশ ছেড়েছেন জেলেনস্কির সহযোগী

রাশিয়ার আগ্রাসনে বিপর্যস্ত ইউক্রেনে এবার প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির এক ঘনিষ্ঠ সহযোগীর বিরুদ্ধে বড় ধরনের দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। দেশটির দুর্নীতিবিরোধী সংস্থাগুলো জানিয়েছে, অভিযুক্ত তিমুর মিনদিচ এরই মধ্যে দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। যুদ্ধের কারণে জ্বালানি অবকাঠামো ধ্বংসের মধ্যে এমন দুর্নীতির খবরে ইউক্রেনজুড়ে ব্যাপক জনরোষ সৃষ্টি হয়েছে।

ইউক্রেনের বিশেষায়িত দুর্নীতি দমন কৌঁসুলির কার্যালয় (এসএপিও) মঙ্গলবার জানায়, মিনদিচ দেশটির জ্বালানি খাতে প্রায় ১০ কোটি ডলার অর্থ আত্মসাতের একটি বড় দুর্নীতি চক্রের মূল পরিকল্পনাকারী। এসএপিওর একজন কৌঁসুলি আদালতে বলেন, ‘মিনদিচ অবৈধভাবে অর্জিত অর্থের সঞ্চয়, বণ্টন ও বৈধকরণের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ রাখতেন। এ কাজে তিনি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের সুযোগ নিয়েছেন।’ অভিযোগে আরও বলা হয়, বর্তমান বিচারমন্ত্রী ও সাবেক জ্বালানিমন্ত্রী জার্মান গালুশচেঙ্কোও মিনদিচের কাছ থেকে ব্যক্তিগত সুবিধা নিয়েছেন। এর বিনিময়ে তিনি জ্বালানি খাতের আর্থিক প্রবাহ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা দিয়েছেন।

ইউক্রেনের জাতীয় দুর্নীতি দমন ব্যুরো (এনএবিইউ) সোমবার জানিয়েছে, তারা ১৫ মাসের তদন্ত শেষে জ্বালানি খাতে ১০ কোটি ডলারের একটি অর্থপাচার চক্র উদ্ঘাটন করেছে। এই ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং সাতজনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আনা হয়েছে।

তদন্তকারী কর্মকর্তা ওলেক্সান্দ্র আবাকুমভ ইউক্রেনের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে জানান, দুর্নীতি দমন অভিযান শুরুর ঠিক আগেই গত ১০ নভেম্বর মিনদিচ দেশ ছাড়েন। তিমুর মিনদিচ ‘কেভার্টাল ৯৫’ নামের একটি গণমাধ্যম প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের অন্যতম মালিক। রাজনীতিতে আসার আগে কৌতুক অভিনেতা হিসেবে জনপ্রিয় থাকাকালে বর্তমান প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি প্রতিষ্ঠানটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।

ইউরোপীয় ইউনিয়নে যোগদানের অন্যতম শর্ত হিসেবে ইউক্রেনকে ব্যাপক দুর্নীতি দমন ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে গত গ্রীষ্মে প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি স্বাধীন দুটি দুর্নীতিবিরোধী সংস্থা এসএপিও এবং এনএবিইউকে সরকারি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে কিয়েভ ও ব্রাসেলসে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন।