একযোগে ১১টি কূপ খনন করছে পেট্রোবাংলা

দেশের চলমান জ্বালানি সংকট নিরসনে দেশীয় গ্যাসের উৎপাদন বাড়াতে বড় ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে পেট্রোবাংলা। বর্তমানে চলমান ১১টি কূপ খনন ও ওয়ার্কওভার কার্যক্রম সফলভাবে শেষ হলে জাতীয় গ্রিডে দৈনিক প্রায় ১৪৩ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস যুক্ত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

বুধবার পেট্রোবাংলার উপ-মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) তারিকুল ইসলাম খানের পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়, জ্বালানির চাহিদা ও সরবরাহের মধ্যে স্থিতিশীলতা আনতে ২০২৫-২৬ সালের মধ্যে ৫০টি এবং ২০২৮ সালের মধ্যে আরও ১০০টি কূপ খননের মহাপরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে।

এই কার্যক্রমের অংশ হিসেবে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রোডাকশন কোম্পানি লিমিটেড (বাপেক্স) জামালপুর-১ অনুসন্ধান কূপে খনন চালিয়ে দেশে প্রথমবারের মতো ব্লক-৮ এ বাণিজ্যিক গ্যাসের সন্ধান পেয়েছে। সেখানে গ্যাসের মজুদের পরিমাণ নিশ্চিত হতে আরও দুটি কূপ খননের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এছাড়া, সিলেট গ্যাস ফিল্ডস লিমিটেডের (এসজিএফএল) হরিপুর গ্যাস ফিল্ডের সিলেট-১০ কূপে তেলের উপস্থিতি পাওয়া গেছে, যা বাণিজ্যিকভাবে উত্তোলনযোগ্য কিনা তা যাচাই করতে সিলেট-১২ তেল কূপ খননের কাজ চলছে।

দেশের দক্ষিণাঞ্চলের অর্থনৈতিক উন্নয়নে যুগান্তকারী ভূমিকা রাখতে ভোলার গ্যাসক্ষেত্রগুলোকেও বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। ওই এলাকায় গ্যাসের মজুদ ও বিস্তৃতি যাচাই করতে আরও ১৯টি নতুন কূপ খননের কাজ চলমান রয়েছে। এখান থেকে প্রাপ্ত গ্যাস ভোলায় নির্মাণাধীন শিল্প হাবে সরবরাহ করা হবে, যা স্থানীয় কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে বড় ভূমিকা রাখবে।

পাশাপাশি, আবিষ্কৃত গ্যাসক্ষেত্রগুলোর গভীর স্তরে গ্যাসের মজুদ অনুসন্ধানেও জোর দিয়েছে পেট্রোবাংলা। বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ডস কোম্পানি লিমিটেডের (বিজিএফসিএল) অধীনে তিতাস ও বাখরাবাদ গ্যাস ফিল্ডে দুটি এবং বাপেক্সের আওতায় শ্রীকাইল ও মোবারকপুর স্ট্রাকচারে দুটিসহ মোট চারটি গভীর কূপ খনন করা হচ্ছে।

এই বিশাল কর্মযজ্ঞ বাস্তবায়নে বাপেক্সের নিজস্ব পাঁচটি রিগের সঙ্গে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের তিনটিসহ মোট আটটি রিগ একযোগে কাজ করছে। আগামী ২৭ নভেম্বর থেকে ঠিকাদারের মাধ্যমে তিতাস-২৮ উন্নয়ন কূপের খনন শুরু হবে। পেট্রোবাংলা জানিয়েছে, ২০২৬ সালের জানুয়ারির মধ্যে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের আরও কয়েকটি রিগ যুক্ত হলে মোট ১১টি রিগের মাধ্যমে কূপ খনন ও ওয়ার্কওভার কার্যক্রম চলবে। এছাড়া বাপেক্সের জন্য আরও দুটি নতুন রিগ কেনার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।

পেট্রোবাংলা আশা করছে, দেশীয় উৎস থেকে গ্যাস সরবরাহ বৃদ্ধির এই উদ্যোগ দেশের বিদ্যমান সংকট কমাতে এবং অর্থনীতিকে শক্তিশালী করতে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করবে।