আফ্রিকায় ২৫ বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ কলেরার প্রাদুর্ভাব

আফ্রিকা ২৫ বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ কলেরা মহামারির সম্মুখীন হয়েছে, যেখানে এই বছরই ৩ লাখের বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছে এবং ৭ হাজারের বেশি মারা গেছে। বৃহস্পতিবার মহাদেশটির স্বাস্থ্য সংস্থা আফ্রিকা সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (আফ্রিকা সিডিসি) এই তথ্য জানিয়েছে।

সংস্থাটির মহাপরিচালক জ্যাঁ কাসেয়া এক ভার্চুয়াল সাপ্তাহিক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন, কলেরা এখনো মহাদেশের জন্য একটি বড় উদ্বেগের বিষয়। তিনি বলেন, ‘২০২২ সাল থেকে এখন পর্যন্ত সংক্রমণের গতিপ্রকৃতি দেখলে বোঝা যায়, প্রতি বছর আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে এবং একই সঙ্গে মৃত্যু ও ক্ষতিগ্রস্ত দেশের সংখ্যাও বাড়ছে।’

এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় জাম্বিয়ায় গৃহীত কলেরা মোকাবিলা পরিকল্পনা পুরোপুরি কার্যকর করার ওপর জোর দেন তিনি। কাসেয়া বলেন, ‘আফ্রিকায় আমরা যে পরিস্থিতি দেখছি, তা থামাতে এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন জরুরি।’ গত আগস্টে জাম্বিয়ার রাজধানী লুসাকায় এই পরিকল্পনাটি চালু করা হয়, যা ২০২৫ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলবে। এর মধ্যে নজরদারি, রোগী ব্যবস্থাপনা, সামাজিক সম্পৃক্ততা, রসদ সরবরাহ এবং টিকাদানের মতো বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

আফ্রিকা সিডিসির তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছর কলেরার সংক্রমণ গত বছরের তুলনায় ৩০ শতাংশেরও বেশি বেড়েছে। অ্যাঙ্গোলা এবং বুরুন্ডিতে সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে কলেরার সংক্রমণ ব্যাপকভাবে বেড়েছে, যার মূল কারণ হিসেবে ভঙ্গুর পানি অবকাঠামোকে দায়ী করা হচ্ছে। কাসেয়া উল্লেখ করেন, বিশুদ্ধ পানি ছাড়া কলেরা নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন এবং এ সমস্যা সমাধানে আফ্রিকা সিডিসি বিভিন্ন দেশের সরকারের সঙ্গে কাজ করছে।

স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সংঘাত এবং মানুষের বাস্তুচ্যুতির কারণে কঙ্গো গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রের পরিস্থিতি এখনো গুরুতর, যদিও চলতি সপ্তাহে সেখানে আক্রান্তের সংখ্যা কিছুটা কমেছে। ব্যাকটেরিয়াঘটিত এই রোগটি আফ্রিকার অন্তত ২৩টি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে, যা মূলত দূষিত পানি ও খাবার গ্রহণের মাধ্যমে সংক্রমিত হয়।