গাজায় অভিযান: ইসরায়েলে পৌঁছাল সামরিক সহায়তার হাজারতম বিমান

ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গাজায় অভিযান শুরুর পর থেকে পশ্চিমা দেশগুলো থেকে তাদের সামরিক সহায়তা অব্যাহত রয়েছে। বুধবার (১৯ নভেম্বর) তেল আবিবে এ ধরনের সহায়তার হাজারতম বিমানটি অবতরণ করেছে। ইসরায়েলের ইতিহাসে এই ঘটনাকে ‘অভূতপূর্ব’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘যুদ্ধ শুরুর পরপরই যে বিস্তৃত সামরিক সরঞ্জাম ও অস্ত্র পরিবহন অভিযান শুরু হয়েছিল, তার হাজারতম বিমান ইসরায়েলে অবতরণ করেছে। বিমানটি বড় আকারের সামরিক সরঞ্জাম বহন করছিল এবং মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আমির বারাম তা গ্রহণ করেন।’

বিবৃতিতে আরও জানানো হয়, এ পর্যন্ত এক হাজার বিমান ও প্রায় ১৫০টি সমুদ্রযানের মাধ্যমে এক লাখ ২০ হাজার টনেরও বেশি অস্ত্র, গোলাবারুদ, প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম ও সামরিক পণ্য ইসরায়েলে পাঠানো হয়েছে। তবে কোন কোন দেশ থেকে এসব সরঞ্জাম এসেছে, তা বিবৃতিতে স্পষ্ট করা হয়নি।

বিভিন্ন দেশ থেকে আসা সামরিক সরঞ্জাম গ্রহণ ও তত্ত্বাবধানের এই কাজটি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের ক্রয় অধিদপ্তর, আন্তর্জাতিক প্রতিরক্ষা পরিবহন ইউনিট, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও বার্লিনে মন্ত্রণালয়ের বিশেষ মিশন, সেনাবাহিনীর পরিকল্পনা ও বাহিনী গঠন অধিদপ্তর এবং ইসরায়েলি বিমানবাহিনীর সমন্বয়ে যৌথভাবে পরিচালিত হচ্ছে।

ওয়াশিংটনভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান কুইন্সি ইনস্টিটিউটের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজায় সামরিক অভিযান শুরুর পর গত দুই বছরে যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলকে অন্তত দুই হাজার ১৭০ কোটি ডলারের সামরিক সহায়তা দিয়েছে। এর মধ্যে সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রশাসন এক হাজার ৭৯০ কোটি ডলার এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন ৩৮০ কোটি ডলারের অস্ত্র সহায়তা দেয়। প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন ছাড়া ইসরায়েল গাজায় তার সামরিক অভিযান চালিয়ে যেতে পারত না।

যুক্তরাষ্ট্র গাজা যুদ্ধজুড়ে তেল আবিবকে সমর্থন করে গেলেও পশ্চিমা বিশ্বের কিছু দেশ ইসরায়েলি আগ্রাসনের সমালোচনা করে দেশটিতে অস্ত্র রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা বা সীমাবদ্ধতা আরোপ করেছে। স্পেন গত সেপ্টেম্বরে রাজকীয় ডিক্রি জারি করে ইসরায়েলের ওপর পূর্ণাঙ্গ অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা দেয়। এর আগে যুক্তরাজ্য, জার্মানি ও কানাডাও অস্ত্র রপ্তানিতে সীমা আরোপ করে।

উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় গাজায় প্রায় ৭০ হাজার মানুষ নিহত এবং এক লাখ ৭০ হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়েছে, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। একইসঙ্গে ইসরায়েলি হামলায় গাজা উপত্যকার অধিকাংশ অঞ্চল ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।