সৌদি আরবকে এফ-৩৫ দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র, তবে ইসরায়েলের চেয়ে দুর্বল সংস্করণ

সৌদি আরবকে অত্যাধুনিক এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান বিক্রি করতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে মার্কিন কর্মকর্তা ও প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, সৌদি আরবকে দেওয়া সংস্করণটি ইসরায়েলের ব্যবহৃত সংস্করণের মতো উন্নত হবে না। বুধবার (১৯ নভেম্বর) পাকিস্তানি গণমাধ্যম ডন এ খবর জানিয়েছে।

মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েলের সামরিক প্রাধান্য অক্ষুণ্ণ রাখতে মার্কিন আইন অনুযায়ী এই ব্যবধান রাখা হচ্ছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি এই যুদ্ধবিমান বিক্রির ঘোষণা দিলেও কর্মকর্তারা বলছেন, সৌদি আরবের জন্য নির্ধারিত বিমানগুলোতে ইসরায়েলের যুদ্ধবিমানের মতো উন্নত অস্ত্রব্যবস্থা বা ইলেকট্রনিক যুদ্ধ-সক্ষমতা থাকবে না।

যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলকে তাদের এফ-৩৫ বিমানে নিজস্ব অস্ত্রব্যবস্থা সংযোজন এবং রাডার জ্যামিং সক্ষমতাসহ বেশ কিছু বিশেষ প্রযুক্তি যুক্ত করার অনুমতি দিয়েছে, যার জন্য মার্কিন অনুমোদনেরও প্রয়োজন হয় না। এদিকে, টাইমস অব ইসরায়েলের খবর অনুযায়ী, ইসরায়েলি বিমানবাহিনী এই বিক্রির বিরোধিতা করে রাজনৈতিক নেতৃত্বকে সতর্ক করেছে। তারা এক অবস্থানপত্রে জানিয়েছে, ‘এই বিক্রি এ অঞ্চলের আকাশে ইসরায়েলের শ্রেষ্ঠত্ব ক্ষুণ্ন করতে পারে’।

মিটচেল ইনস্টিটিউট ফর অ্যারোস্পেস স্টাডিজের নির্বাহী পরিচালক ডগলাস বার্কি বলেছেন, সৌদি আরব এফ-৩৫ পেলেও পরবর্তী প্রজন্মের আকাশ থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র ‘এআইএম-২৬০’ পাওয়ার সম্ভাবনা কম। ১২০ মাইলের বেশি পাল্লার এই ক্ষেপণাস্ত্রকে এফ-৩৫ প্ল্যাটফর্মের অন্যতম সংবেদনশীল প্রযুক্তি হিসেবে বিবেচনা করা হয়, যা ইসরায়েল পেতে পারে।

মূলত, প্রতিটি দেশের জন্য এফ-৩৫ বিমান আলাদাভাবে তৈরি করা হয় এবং সফটওয়্যার প্যাকেজের মাধ্যমে সৌদি বিমানগুলোকে ইসরায়েলি বিমানের চেয়ে প্রযুক্তিগতভাবে দুর্বল রাখা সম্ভব। মার্কিন কর্মকর্তারা জানান, বিক্রয় চূড়ান্ত হওয়ার আগে একটি আনুষ্ঠানিক গুণগত সামরিক সুবিধা (কিউএমই) পর্যালোচনা করা হবে। এছাড়া কংগ্রেসেও এই চুক্তির অনুমোদন প্রয়োজন, যেখানে ইসরায়েলের শক্তিশালী সমর্থনের কারণে এটি বাধার মুখে পড়তে পারে।

এই যুদ্ধবিমান বিক্রির চুক্তি সম্পন্ন হলে সৌদি আরব আঞ্চলিক শক্তিতে কাতার ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের সমপর্যায়ে চলে আসবে। যদিও এই দুটি দেশের সঙ্গেও এফ-৩৫ বিক্রির চুক্তি সরবরাহের সময়সূচি এবং চীনের প্রযুক্তি ব্যবহারের সুযোগ নিয়ে উদ্বেগের কারণে আটকে আছে।