খুলছে সেন্ট মার্টিন: ১ ডিসেম্বর থেকে জাহাজ চলবে, থাকছে রাতযাপনের সুযোগ

পর্যটকদের দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে প্রবাল দ্বীপ সেন্ট মার্টিনে জাহাজ চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। আগামী ১ ডিসেম্বর থেকে পর্যটকরা এই দ্বীপে ভ্রমণের সুযোগ পাবেন এবং সেখানে রাতে অবস্থানও করতে পারবেন। তবে দ্বীপের পরিবেশগত সুরক্ষার বিষয়টি মাথায় রেখে এবার কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে।

নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, প্রতিদিন সর্বোচ্চ দুই হাজার পর্যটক সেন্ট মার্টিন দ্বীপে যেতে পারবেন। এই সীমা নিশ্চিত করতে কক্সবাজারের নুনিয়ারছড়া বিআইডব্লিউটিএ জেটিঘাট এবং সেন্ট মার্টিন জেটিঘাটে বিশেষ তল্লাশির ব্যবস্থা রাখা হবে। পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজার কার্যালয়ের উপপরিচালক খন্দকার মাহবুব পাশা জানিয়েছেন, পর্যটক পারাপারের সময় জাহাজগুলো কঠোর নজরদারিতে থাকবে।

কক্সবাজার শহর থেকে সেন্ট মার্টিনের দূরত্ব প্রায় ১২০ কিলোমিটার, যা পাড়ি দিতে জাহাজে সময় লাগে প্রায় ৬ থেকে ৭ ঘণ্টা। পর্যটকদের সুবিধার জন্য প্রতিদিন সকাল ৭টায় কক্সবাজারের নুনিয়ারছড়া ঘাট থেকে জাহাজ ছেড়ে যাবে এবং পরদিন বেলা ৩টায় সেন্ট মার্টিন থেকে কক্সবাজারের উদ্দেশে ফিরবে।

সরকারি ঘোষণা অনুযায়ী, গত ১ নভেম্বর থেকে পর্যটন মৌসুম শুরু হলেও রাতে থাকার অনুমতি না থাকায় এতদিন কোনো পর্যটক সেন্ট মার্টিন ভ্রমণে যাননি। জাহাজ মালিকদের সংগঠন ‘সি ক্রুজ অপারেটর ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের’ সাধারণ সম্পাদক হোসাইন ইসলাম জানান, রাতে থাকার সুযোগ না থাকায় পর্যটকদের আগ্রহ ছিল না, তাই জাহাজ চলাচল বন্ধ ছিল। তবে ১ ডিসেম্বর থেকে টানা দুই মাস রাতযাপনের অনুমতি থাকায় পর্যটকদের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ দেখা যাচ্ছে।

এই রুটে পর্যটক পরিবহনের জন্য এমভি কর্ণফুলী এক্সপ্রেস, এমভি বে ক্রুজ, এমভি বারো আউলিয়া, কেয়ারী সিন্দাবাদ, আটলান্টিক ক্রুজ, এমভি কাজল এবং কেয়ারী ক্রুজ অ্যান্ড ডাইনসহ মোট সাতটি জাহাজ প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

ভ্রমণের ক্ষেত্রে বেশ কিছু নতুন নিয়ম মানতে হবে। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন ছাড়া কোনো নৌযান চলাচল করতে পারবে না। পর্যটকদের অবশ্যই বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের স্বীকৃত ওয়েব পোর্টাল থেকে অনলাইনে টিকিট সংগ্রহ করতে হবে, যেখানে প্রতিটি টিকিটে কিউআর কোড সংযুক্ত থাকবে। এই কোড ছাড়া টিকিট নকল বলে বিবেচিত হবে।