লি জে-মিয়ং: বৈষম্য থাকলে কোনো দেশের ভবিষ্যৎই নিরাপদ নয়

বিশ্বজুড়ে চলমান বৈষম্য ও ভারসাম্যহীনতা লাগামহীনভাবে চলতে থাকলে কোনো দেশই তার ভবিষ্যৎ নিরাপদ করতে পারবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট লি জে-মিয়ং। শনিবার দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গে অনুষ্ঠিত জি-২০ নেতাদের শীর্ষ সম্মেলনের এক অধিবেশনে তিনি এই মন্তব্য করেন।

লি জে-মিয়ং বলেন, বিশ্ব আজ স্বল্প প্রবৃদ্ধি ও ভারসাম্যহীনতার মতো জটিল অর্থনৈতিক সংকটের মুখোমুখি। তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘যদি বর্তমান বৈষম্য ও ভারসাম্যহীনতা আরও বাড়তে দেওয়া হয়, তাহলে আমাদের মধ্যে কেউই বা আমাদের কোনো প্রতিবেশীই তাদের ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত করতে পারবে না। এই ব্যবধান পূরণ করতে, বৈষম্য মোকাবিলা করতে এবং সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করতে হবে, যাতে আমরা সবাই একটি সমৃদ্ধ ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যেতে পারি।’

দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট এই সংকট মোকাবিলায় তিনটি সমাধানের কথা তুলে ধরেন। প্রথমত, ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যাওয়ার জন্য অবিচ্ছিন্ন প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যে অর্থনৈতিক ভিত্তি শক্তিশালী করা। দ্বিতীয়ত, একটি অনুমানযোগ্য বাণিজ্য ও বিনিয়োগ পরিবেশ তৈরির মাধ্যমে প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনা বাড়ানো এবং তৃতীয়ত, উন্নয়নশীল দেশগুলোর প্রবৃদ্ধিকে চালনা করা।

তিনি বলেন, উচ্চ প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে এমন খাতগুলোতে সম্পদ প্রবাহিত করতে হবে, যা ‘সম্পদ তৈরি ও ঋণ কমানোর একটি টেকসই চক্র’ তৈরি করবে। লি জে-মিয়ং উল্লেখ করেন, তার দেশ উৎপাদনশীলতা বাড়াতে এবং কর্মক্ষমতা-ভিত্তিক রাজস্ব নীতির মাধ্যমে দীর্ঘমেয়াদি ঋণ কমাতে ‘কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মতো ভবিষ্যৎমুখী খাতে বিনিয়োগ’ করছে।

উন্নয়নশীল দেশগুলোর পরিস্থিতি তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘অতিরিক্ত ঋণের বোঝায় উন্নয়নশীল দেশগুলো জর্জরিত, যা তাদের প্রবৃদ্ধিতে বিনিয়োগের সক্ষমতা সীমিত করে দিচ্ছে। ফলে আমরা টেকসই প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনাকে আটকে রাখছি। উন্নয়নশীল দেশগুলোর এই সমস্যা মোকাবিলায় ঋণের স্থায়িত্বশীলতা জোরদার করার প্রচেষ্টা আমাদের থামাতে হবে না।’

লি জে-মিয়ং আরও জানান, সিউল জি-২০ এর বিভিন্ন উদ্যোগে সক্রিয়ভাবে অংশ নেবে, বহুপাক্ষিক উন্নয়ন ব্যাংকগুলোর সংস্কার প্রচেষ্টায় অংশগ্রহণ অব্যাহত রাখবে এবং উন্নয়নশীল দেশগুলোতে যেন আরও বেশি সুবিধা পৌঁছায়, তা নিশ্চিত করতে জি-২০ সদস্যদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করবে।

তিনি বলেন, ‘একটি টেকসই ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যেতে আমাদের অবশ্যই ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।’ তিনি আরও যোগ করেন, দক্ষিণ কোরিয়া ‘পিছিয়ে পড়া দেশের সংখ্যা সর্বনিম্ন পর্যায়ে নামিয়ে আনতে’ সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালাবে।