গাজার ভবিষ্যৎ নিরাপত্তা বাহিনী গঠনে শত শত ফিলিস্তিনিকে প্রশিক্ষণ দিচ্ছে মিশর
- Details
- by আন্তর্জাতিক ডেস্ক
যুদ্ধ-পরবর্তী গাজা উপত্যকায় একটি নতুন নিরাপত্তা কাঠামো গড়ে তোলার লক্ষ্যে মিশর শত শত ফিলিস্তিনি পুলিশ কর্মকর্তাকে প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। কায়রোর এই উদ্যোগের মূল উদ্দেশ্য হলো, প্রশিক্ষিত এই কর্মকর্তাদের ভবিষ্যৎ গাজা পুলিশ বাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত করা। এক ফিলিস্তিনি কর্মকর্তার বরাতে বার্তা সংস্থা এএফপি এই তথ্য জানিয়েছে।

মিশরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাদর আবদেলাত্তি গত আগস্টে ফিলিস্তিনি প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ মুস্তাফার সঙ্গে এক বৈঠকে গাজার জন্য পাঁচ হাজার পুলিশ সদস্যকে প্রশিক্ষণের একটি পরিকল্পনা ঘোষণা করেন। সেই পরিকল্পনার অংশ হিসেবেই প্রথম দফায় পাঁচ শতাধিক সদস্যকে চলতি বছরের মার্চ মাসে কায়রোতে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। এরপর সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হওয়া নতুন ব্যাচগুলোতে দুই মাস মেয়াদি কোর্সে অংশ নিয়েছেন শত শত পুলিশ কর্মকর্তা।
এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এই বাহিনীর সকল সদস্যই হবেন গাজার বাসিন্দা এবং তাদের বেতন দেবে পশ্চিম তীরের রামাল্লাভিত্তিক ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ (পিএ)।
প্রশিক্ষণে অংশ নেওয়া ২৬ বছর বয়সী এক ফিলিস্তিনি পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা যুদ্ধ ও আগ্রাসনের চিরস্থায়ী অবসান চাই। আমরা আমাদের দেশ ও জনগণের সেবায় কাজ করতে প্রস্তুত।’ তার আশা, ‘এ নিরাপত্তা বাহিনী হবে স্বাধীন, কেবল ফিলিস্তিনের প্রতি অনুগত এবং কোনো বহিরাগত জোট বা উদ্দেশ্যের অধীন নয়।’
আরেকজন লেফটেন্যান্ট জানান, প্রশিক্ষণে আধুনিক সীমান্ত নজরদারির সরঞ্জাম ব্যবহারের ওপর বিশেষ জোর দেওয়া হচ্ছে। তিনি আরও জানান, ২০২৩ সালের অক্টোবরে হামাসের হামলার প্রভাব এবং ফিলিস্তিনিদের স্বার্থে এর ক্ষতিকর দিকগুলো প্রশিক্ষণে বিশেষভাবে তুলে ধরা হয়েছে।
উল্লেখ্য, হামাসের ওই হামলায় প্রায় এক হাজার ২২১ জন নিহত হয়েছিলেন। এর জবাবে ইসরায়েলের পাল্টা অভিযানে গাজায় এখন পর্যন্ত ৭০ হাজারের বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন বলে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।
প্রশিক্ষণ কার্যক্রমে ফিলিস্তিন মুক্তি সংস্থাকে (পিএলও) ফিলিস্তিনিদের একমাত্র বৈধ প্রতিনিধি হিসেবে তুলে ধরা হয়। একই সঙ্গে একটি পূর্ণ সার্বভৌম ও স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার স্বপ্নকে সমুন্নত রাখার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়। ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের একজন জ্যেষ্ঠ নিরাপত্তা কর্মকর্তা বিষয়টি নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস এ বিষয়ে মিশরের সঙ্গে সমন্বয় সাধনের নির্দেশ দিয়েছেন।
গত বছরের শেষের দিকে মিশরের মধ্যস্থতায় হামাস ও ফাতাহসহ বিভিন্ন ফিলিস্তিনি গোষ্ঠীর মধ্যে আলোচনায় প্রায় ১০ হাজার সদস্যের একটি পুলিশ বাহিনী গঠনের বিষয়ে মতৈক্য হয়। এর অর্ধেক সদস্যকে মিশর প্রশিক্ষণ দেবে এবং বাকি পাঁচ হাজার সদস্য হামাস-নিয়ন্ত্রিত বর্তমান গাজা পুলিশ বাহিনী থেকে নেওয়া হবে। ফিলিস্তিনি গোষ্ঠীগুলোর অনুমোদিত একটি প্রযুক্তিবিদ কমিটি এই বাহিনী তদারকি করবে। হামাসও আলোচনায় নির্ধারিত নিরাপত্তা ও প্রশাসনিক কাঠামোকে সমর্থন জানিয়েছে।
বিষয়টি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শান্তি পরিকল্পনাতেও উল্লেখ ছিল, যার ভিত্তিতে গত মাসে গাজায় একটি ভঙ্গুর যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয় এবং যা পরবর্তীতে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবে অনুমোদন লাভ করে। ওই পরিকল্পনায় গাজার সীমান্ত সুরক্ষা ও নিরস্ত্রীকরণের দায়িত্বে একটি আন্তর্জাতিক বাহিনী মোতায়েনের কথা বলা হয়েছিল।
ইউরোপীয় ইউনিয়নও গাজায় সর্বোচ্চ তিন হাজার ফিলিস্তিনি পুলিশ সদস্যকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছে। পশ্চিম তীরে ২০০৬ সাল থেকে চলমান ইউরোপীয় ইউনিয়নের পুলিশ প্রশিক্ষণ কর্মসূচির বাজেট প্রায় ১৩ মিলিয়ন ইউরো।
তবে গাজায় ভবিষ্যৎ নিরাপত্তা বাহিনী গঠন নিয়ে অনেক প্রশ্ন এখনো অমীমাংসিত। হামাসের এক কর্মকর্তা স্পষ্ট করে বলেছেন, এ বাহিনী নিয়ে ইসরায়েলের সঙ্গে চূড়ান্ত সমঝোতায় পৌঁছানো বেশ কঠিন হবে। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সরকার যুদ্ধোত্তর গাজায় হামাস বা ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের কোনো ভূমিকা দেখতে চায় না।
অন্যদিকে হামাস জানিয়েছে, তারা গাজার শাসনে থাকতে না চাইলেও ‘রাজনীতি থেকে হারিয়ে যাবে না’। নিরস্ত্রীকরণের বিষয়ে তারা একটি ‘ফিলিস্তিনি রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার’ অংশ হিসেবে আংশিক অস্ত্র হস্তান্তরে রাজি আছে।
গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...
খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর
Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.
Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.