পথ খুঁজছেন মাহফুজ ও আসিফ, সরকার না ভোটের মাঠ?

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল আগামী সপ্তাহে ঘোষণার সম্ভাবনার মাঝে অন্তর্বর্তী সরকারের দুই উপদেষ্টা মাহফুজ আলম ও আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়ার রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে চলছে ব্যাপক আলোচনা। তারা কি উপদেষ্টার পদে থেকে যাবেন, নাকি পদত্যাগ করে নির্বাচনের মাঠে নামবেন—এই প্রশ্নে রাজনৈতিক অঙ্গনে কৌতূহল বিরাজ করছে। যদিও দুজনের কেউই এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো স্পষ্ট বক্তব্য দেননি।

সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে সম্প্রতি তাদের দুজনকে আবারও পদত্যাগের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে বলে একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র নিশ্চিত করেছে। এর আগেও সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে তাদের পদত্যাগের জন্য বলা হয়েছিল, কিন্তু তখন তারা আরও কিছুটা সময় চেয়েছিলেন।

স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ ঢাকা থেকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার বিষয়টি আগেই নিশ্চিত করেছেন। তবে তিনি কোন দল বা প্রতীক নিয়ে লড়বেন, তা এখনো ধোঁয়াশায় রয়েছে। বিএনপি, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) নাকি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মাঠে নামবেন, সে বিষয়ে কোনো কিছুই খোলাসা করেননি তিনি। তার ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানিয়েছে, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগেই তিনি সরকার থেকে পদত্যাগ করতে পারেন।

আসিফ মাহমুদের সম্ভাব্য নির্বাচনী আসন ঢাকা-১০ (ধানমন্ডি, কলাবাগান, নিউমার্কেট ও হাজারীবাগ) থেকে বিএনপি এখনো কোনো প্রার্থী ঘোষণা করেনি। সম্প্রতি আসিফের সমর্থকদের এনসিপির সমালোচনা করতে দেখা গেছে এবং তারা বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন ও খালেদা জিয়ার আরোগ্য কামনায় দোয়া মাহফিলের মতো কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন। এসব ঘটনা থেকে ধারণা করা হচ্ছে, তিনি বিএনপির হয়ে নির্বাচনে অংশ নিতে আগ্রহী হতে পারেন।

অন্যদিকে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের বিষয়টি এখনো পুরোপুরি অনিশ্চিত। তার ঘনিষ্ঠ সূত্র বলছে, তিনি হয়তো সরকার থেকে পদত্যাগ না করে শেষ পর্যন্ত উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করে যেতে পারেন। সেক্ষেত্রে তিনি নির্বাচনে অংশ নেবেন না। তবে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলে তফসিলের আগেই পদত্যাগ করবেন। তার ভাই মাহবুব আলম জানিয়েছেন, মাহফুজের নির্বাচন করার সম্ভাবনা রয়েছে এবং সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত না হলে তিনি নিজেই এনসিপি থেকে প্রার্থী হতে আগ্রহী।

মাহফুজ আলম যদি নির্বাচনে আসেন, তবে তার গ্রামের বাড়ি লক্ষ্মীপুর-১ আসন থেকে প্রার্থী হওয়ার কথা রয়েছে। এই আসনে বিএনপির জোটসঙ্গী বাংলাদেশ এলডিপির চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন সেলিম একজন শক্তিশালী মনোনয়নপ্রত্যাশী।

জুলাইয়ের গণ-অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া এই দুই ছাত্রনেতার সহকর্মীরা মিলে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) গঠন করেছিলেন। দলটিতে তাদের যথেষ্ট প্রভাবও রয়েছে। প্রথমে বিএনপির সঙ্গে আসন সমঝোতার গুঞ্জন থাকলেও এখন সেই সম্ভাবনা ক্ষীণ। বর্তমানে দলটি এবি পার্টি ও রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের মতো কয়েকটি দলকে নিয়ে তৃতীয় একটি জোট গঠনের চেষ্টা করছে, যা নানা কারণে এখনো চূড়ান্ত রূপ পায়নি।

প্রথম আলো অবলম্বনে