কাতারের প্রধানমন্ত্রী: পশ্চিম তীর ছাড়া গাজা যুদ্ধবিরতি অসম্পূর্ণ

কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আব্দুল রহমান আল থানি বলেছেন, পশ্চিম তীর ছাড়া গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি অসম্পূর্ণ থাকবে। শনিবার দোহা ফোরাম ২০২৫-এর এক প্যানেল আলোচনায় তিনি জানান, কাতার এই অঞ্চলের স্থিতিশীলতার প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং একে নিজেদের জাতীয় নিরাপত্তার অবিচ্ছেদ্য অংশ মনে করে।

দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে তার উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়, কাতার সামরিক উপায়ে ক্ষমতা প্রদর্শনের আকাঙ্ক্ষা রাখে না। বরং কূটনীতি, বিনিয়োগ এবং কৌশলগত অংশীদারত্বের মাধ্যমেই তারা কাজ করতে চায়, যা এই ক্ষেত্রে কাতারের অন্যতম অবদান বলে তিনি বর্ণনা করেছেন।

তিনি বলেন, ‘ক্রমবর্ধমান সংঘাতপূর্ণ আন্তর্জাতিক পরিস্থিতিতে কাতার মধ্যস্থতার মাধ্যমে দ্বন্দ্ব নিরসনে কাজ করে।’

শেখ মোহাম্মদ আরও উল্লেখ করেন, কাতার সব পক্ষের সঙ্গে যোগাযোগের পথ খোলা রাখতে চায় এবং কোনো পক্ষের প্রতি পক্ষপাতিত্ব করে না। কারণ এ ধরনের উন্মুক্ততা ছাড়া কোনো বিরোধই অর্থবহভাবে সমাধান করা সম্ভব নয়। ২০১৩ সাল থেকে এই ক্ষেত্রে কাতার যেসব অগ্রগতি অর্জন করেছে, তা প্রতিটি অংশীজনের সঙ্গে তাদের সম্পৃক্ততার ফসল বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

কাতারের প্রধানমন্ত্রী ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাতের মূল কারণগুলো সমাধানের ওপর জোর দেন। তিনি বলেন, ‘এই প্রচেষ্টা শুধুমাত্র গাজার বিপর্যয় থামানোর মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকা উচিত নয়, বরং পশ্চিম তীরের পরিস্থিতি এবং ফিলিস্তিনিদের জাতীয় আকাঙ্ক্ষা পূরণের বিষয়টিও এতে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।’

গাজা যুদ্ধবিরতির বিষয়ে বর্তমানে একটি ‘নির্ণায়ক মুহূর্ত’ চলছে বলে মন্তব্য করেন তিনি। তিনি উল্লেখ করেন, মধ্যস্থতাকারীরা বর্তমানে চুক্তির দ্বিতীয় ধাপ নিয়ে কাজ করছেন, যাকে তিনি আরেকটি অন্তর্বর্তীকালীন পদক্ষেপ হিসেবে বর্ণনা করেন।

তিনি আরও জানান, কাতার, তুরস্ক, মিশর এবং যুক্তরাষ্ট্র যৌথভাবে এই পরবর্তী ধাপের গতিপথ নির্ধারণ করছে।

গত ১০ অক্টোবর যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকর হয়। এর মাধ্যমে ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে চলা দুই বছরের ইসরায়েলি যুদ্ধের অবসান ঘটে। এই যুদ্ধে ৭০ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন, যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। এছাড়া আহত হয়েছেন প্রায় ১ লাখ ৭১ হাজার জন। চুক্তির প্রথম ধাপে ফিলিস্তিনি বন্দিদের বিনিময়ে ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তির বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। পরিকল্পনায় গাজা পুনর্গঠন এবং হামাসবিহীন একটি নতুন শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার কথাও রয়েছে।