প্রোটিয়াদের উড়িয়ে ওয়ানডে সিরিজ ভারতের, টি-টোয়েন্টিতে ফিরলেন গিল

দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হওয়ার তিক্ত স্মৃতি ভুলে ওয়ানডে সিরিজে দুর্দান্তভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে ভারত। বিশাখাপত্তনমে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে প্রোটিয়াদের ৯ উইকেটের বিশাল ব্যবধানে হারিয়ে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ নিশ্চিত করেছে স্বাগতিকরা। এই জয়ের আনন্দের মাঝেই ভারতীয় শিবিরে এসেছে আরেকটি সুখবর। চোট কাটিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে আসন্ন টি-টোয়েন্টি সিরিজের জন্য ফিটনেস ছাড়পত্র পেয়েছেন শুভমান গিল।

সিরিজ নির্ধারণী এই ম্যাচে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে কুইন্টন ডি ককের সেঞ্চুরির পরও ভারতীয় বোলারদের দাপটে ২৭০ রানে গুটিয়ে যায় দক্ষিণ আফ্রিকা। জবাবে ব্যাট করতে নেমে ওপেনার যশস্বী জয়সওয়ালের ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি এবং অধিনায়ক রোহিত শর্মা ও বিরাট কোহলির দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে মাত্র ৩৯.৫ ওভারেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় টিম ইন্ডিয়া।

রান তাড়ায় ভারতের দুই ওপেনার রোহিত শর্মা ও যশস্বী জয়সওয়াল শুরু থেকেই ছিলেন সাবলীল। উদ্বোধনী জুটিতে তারা ১৫৫ রান যোগ করেন। এই পথেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ২০ হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন রোহিত শর্মা। শচীন টেন্ডুলকার, রাহুল দ্রাবিড় ও বিরাট কোহলির পর চতুর্থ ভারতীয় হিসেবে এই কীর্তি গড়লেন তিনি। ব্যক্তিগত ৭৫ রানে কেশব মহারাজের বলে রোহিত ফিরলেও ভারতকে আর পেছনে তাকাতে হয়নি। যশস্বী জয়সওয়াল ১২১ বলে ১২টি চার ও ২টি ছক্কায় সাজানো অপরাজিত ১১৬ রানের ইনিংস খেলে দলের জয় নিশ্চিত করেন। অন্যদিকে, বিরাট কোহলি ৪৫ বলে ৬ চার ও ৩ ছক্কায় ৬৫ রানে অপরাজিত থাকেন। কোহলি ও যশস্বীর অবিচ্ছিন্ন জুটিতে ১০.১ ওভার হাতে রেখেই লক্ষ্যে পৌঁছে যায় ভারত।

এর আগে ব্যাট করতে নেমে দক্ষিণ আফ্রিকার শুরুটা ভালো হয়নি। প্রথম ওভারেই শূন্য রানে রায়ান রিকেলটনকে ফেরান আর্শদীপ সিং। তবে দ্বিতীয় উইকেটে অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা ও কুইন্টন ডি কক ১১৩ রানের জুটি গড়ে বড় সংগ্রহের ইঙ্গিত দিচ্ছিলেন। বাভুমা ৪৮ রানে রবীন্দ্র জাদেজার শিকার হন। ডি কক একাই লড়াই চালিয়ে যান এবং ভারতের বিপক্ষে নিজের সপ্তম ওয়ানডে সেঞ্চুরি তুলে নেন। ৮৯ বলে ১০৬ রান করে তিনি আউট হন। একসময় দক্ষিণ আফ্রিকার স্কোর ২ উইকেটে ১৬৮ থাকলেও এরপরই ধস নামে। ভারতীয় পেসার প্রসিদ্ধ কৃষ্ণ ও স্পিনার কুলদীপ যাদব ৪টি করে উইকেট নিয়ে প্রোটিয়াদের লাগাম টেনে ধরেন। প্রসিদ্ধ এক ওভারেই ম্যাথিউ ব্রিটজ ও এইডেন মার্করামকে ফিরিয়ে দেন। শেষ পর্যন্ত ৪৭.৫ ওভারে ২৭০ রানে থামে সফরকারীদের ইনিংস।

ওয়ানডে সিরিজ জয়ের স্বস্তির মধ্যেই টি-টোয়েন্টি দল নিয়ে অনিশ্চয়তা কেটেছে। দলের সহ-অধিনায়ক শুভমান গিলকে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি স্কোয়াডে রাখা হলেও তার খেলা নির্ভর করছিল চিকিৎসকদের ছাড়পত্রের ওপর। অবশেষে সেই বাধা কেটেছে। বেঙ্গালুরুর সেন্টার অব এক্সিলেন্সে রিহ্যাব শেষ করে তিন ফরম্যাটে খেলার যোগ্যতামান পূর্ণ করেছেন গিল।

বোর্ডের ফিজিও কমলেশ জৈন, স্ট্রেংথ ও কন্ডিশনিং কোচ আদ্রিয়ান লে রু এবং স্পোর্টস ডিরেক্টর ডক্টর চার্লসের তত্ত্বাবধানে ছিলেন গিল। তারা সবদিক খতিয়ে দেখে তাকে খেলার অনুমতি দিয়েছেন। সেন্টার অব এক্সিলেন্সের এক কর্মকর্তা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। আগামী ৯ ডিসেম্বর থেকে শুরু হচ্ছে পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ। এরপর ১১ ডিসেম্বর চণ্ডীগড়, ১৪ ডিসেম্বর ধর্মশালা, ১৭ ডিসেম্বর লখনউ এবং ১৯ ডিসেম্বর আহমেদাবাদে অনুষ্ঠিত হবে সিরিজের বাকি ম্যাচগুলো।