হন্ডুরাস: জালিয়াতির অভিযোগের মধ্যেই ভোটগণনা শুরু, ট্রাম্পের বিরুদ্ধে হস্তক্ষেপের অভিযোগ

হন্ডুরাসে নির্বাচনী জালিয়াতি ও অনিয়মের অভিযোগের মধ্যে তিন দিনের অচলাবস্থা ভেঙে পুনরায় ভোটগণনা শুরু হয়েছে। সোমবার দেশটির নির্বাচন কমিশন নির্বাচনের হালনাগাদ ফল প্রকাশ করে, যেখানে দেখা যায় রক্ষণশীল প্রার্থী নাসরি আসফুরা সামান্য ব্যবধানে এগিয়ে আছেন। এই পরিস্থিতিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মন্তব্যের জেরে নির্বাচনী হস্তক্ষেপের অভিযোগ পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে।

নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, ৮৯ শতাংশ ভোটগণনার পর রক্ষণশীল প্রার্থী নাসরি আসফুরা ৪০ দশমিক ২১ শতাংশ ভোট পেয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মধ্যপন্থী প্রার্থী সালভাদর নাসরালা পেয়েছেন ৩৯ দশমিক ৫০ শতাংশ ভোট। ক্ষমতাসীন লিব্রে দলের বামপন্থী প্রার্থী রিক্সি মনকাডা ১৯ দশমিক ২৮ শতাংশ ভোট পেয়ে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছেন।

জাতীয় নির্বাচন কাউন্সিলের (সিএনই) সভাপতি আনা পাওলা হল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জানান, বহিরাগত নিরীক্ষার পর প্রয়োজনীয় প্রযুক্তিগত যাচাই শেষে ফলাফল হালনাগাদ করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘তথ্যগুলো এখন হালনাগাদ করা হচ্ছে। প্রার্থীদের সতর্ক থাকতে হবে এবং প্রয়োজন হলে আইনানুযায়ী আপত্তি জানাতে হবে।’

নির্বাচনের আগে থেকেই জালিয়াতির অভিযোগ নিয়ে বিতর্ক চলছিল, যার সঙ্গে যুক্ত হয় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মন্তব্য। তিনি ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, নাসরি আসফুরা ছাড়া অন্য কারো সঙ্গে কাজ করা যুক্তরাষ্ট্রের জন্য কঠিন হবে। ট্রাম্প এক বিবৃতিতে লিখেছিলেন, ‘আসফুরা না জিতলে যুক্তরাষ্ট্র তার ‘ভালো অর্থ’ খারাপের পিছনে খরচ করবে না।’ তার এই মন্তব্যের পর অন্য প্রার্থীরা তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং ট্রাম্পের বিরুদ্ধে সরাসরি নির্বাচনে হস্তক্ষেপের অভিযোগ তোলেন।

এই পরিস্থিতিতে লিব্রে দলের প্রার্থী রিক্সি মনকাডা জানিয়েছেন, ‘হস্তক্ষেপ ও চাপের’ মধ্যে প্রকাশিত এই ফলাফলকে তিনি স্বীকৃতি দেবেন না। সালভাদর নাসরালাও অভিযোগ করেছেন, ট্রাম্পের মন্তব্যের কারণে তার ভোট কমেছে।

সিএনই জানিয়েছে, মোট ভোটের প্রায় ১৪ শতাংশে অসঙ্গতি পাওয়া গেছে, যা পুনরায় পরীক্ষা করা হবে। ২০০৯ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকে দেশটিতে দমন-পীড়ন ও সহিংসতার ইতিহাস থাকায় সাধারণ মানুষ শঙ্কিত। ২০১৭ সালের বিতর্কিত নির্বাচনের পর নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে অন্তত ১৬ জনসহ প্রায় ৩০ জন নিহত হয়েছিলেন, যা এবারের দীর্ঘায়িত ভোটগণনায় নতুন করে অস্থিরতার আশঙ্কা তৈরি করেছে। সুশীল সমাজ, মানবাধিকার সংগঠন এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আমেরিকান স্টেটস অর্গানাইজেশনের পর্যবেক্ষকরা সব পক্ষকে ধৈর্য ধারণ ও শান্তি বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছে।