যুক্তরাষ্ট্রের পথে মেক্সিকো: ভারতীয় পণ্যে বসছে ৫০ শতাংশ শুল্ক

যুক্তরাষ্ট্রের পদাঙ্ক অনুসরণ করে এবার কঠোর পদক্ষেপ নিলো মেক্সিকো। ভারত, চীনসহ এশিয়ার বেশ কয়েকটি দেশের পণ্যের ওপর ৫০ শতাংশ আমদানি শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছে লাতিন আমেরিকার এই দেশটি। মেক্সিকো সরকারের এই নতুন সিদ্ধান্তের ফলে ভারতের বাণিজ্য খাতে বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

২০২৬ সালের ১ জানুয়ারি থেকে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে। মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট ক্লডিয়া শেইনবাউম স্থানীয় শিল্প ও উৎপাদকদের স্বার্থ রক্ষার লক্ষ্যেই এমন কড়া পদক্ষেপ নিয়েছেন। মূলত যেসব দেশের সঙ্গে মেক্সিকোর কোনো বাণিজ্য চুক্তি নেই, তাদের ওপরই এই বাড়তি করের বোঝা চাপানো হচ্ছে। এর মাধ্যমে মেক্সিকো সরকার অতিরিক্ত ৩.৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে।

নতুন এই নীতিমালার আওতায় মেক্সিকোর স্থানীয় শিল্পকে প্রতিযোগিতার মুখে ঠেলে দেওয়া পণ্যগুলো চিহ্নিত করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে অটো পার্টস, হালকা যানবাহন, স্টিল, অ্যালুমিনিয়াম, প্লাস্টিক, খেলনা, পোশাক ও টেক্সটাইল সামগ্রী। এ ছাড়া সাবান, পারফিউমসহ বিভিন্ন প্রসাধন সামগ্রী, চামড়াজাত পণ্য এবং গৃহস্থালি ব্যবহারের নানা জিনিসের ওপরও এই শুল্ক প্রযোজ্য হবে।

মেক্সিকোর এই সিদ্ধান্তে সবচেয়ে বড় ধাক্কা খেতে যাচ্ছে ভারতের অটোমোবাইল খাত। আগে যেখানে গাড়ির আমদানি শুল্ক ছিল ২০ শতাংশ, তা এক লাফে বাড়িয়ে ৫০ শতাংশ করা হয়েছে। শিল্প সংশ্লিষ্টদের মতে, এর ফলে ভারতের গাড়ি রপ্তানি বাণিজ্যে প্রায় ৯ হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হতে পারে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে মেক্সিকোর সঙ্গে দ্রুত আলোচনায় বসার জন্য ভারত সরকারের কাছে আহ্বান জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

মেক্সিকো সরকার মনে করছে, এশিয়ায় উৎপাদিত শিল্পপণ্য, বিশেষ করে চীনের ওপর তাদের দেশ অতিরিক্ত মাত্রায় নির্ভরশীল হয়ে পড়েছিল। এতে বাণিজ্য ঘাটতি বাড়ছিল। তাই আমদানি কমিয়ে নিজস্ব উৎপাদন বৃদ্ধি, জাতীয় শিল্পের সুরক্ষা এবং নতুন কর্মসংস্থান তৈরির ওপর জোর দিচ্ছে তারা।

উল্লেখ্য, কিছুদিন আগেই আমেরিকা একই ধরনের শুল্ক আরোপ করেছিল। সেই জটিলতা নিরসনে যখন ওয়াশিংটনের সঙ্গে নয়াদিল্লির আলোচনা চলছে, ঠিক তখনই মেক্সিকোর পক্ষ থেকেও এমন ঘোষণা এল। এর ফলে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে ভারতের জন্য নতুন করে উদ্বেগের কারণ সৃষ্টি হলো।