গুতেরেস: সুদানে বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের ওপর হামলা ‘যুদ্ধাপরাধ’ বিবেচিত হতে পারে

যুদ্ধবিধ্বস্ত সুদানে বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের ওপর ড্রোন হামলায় হতাহতের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ও তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। তিনি এই হামলাকে সম্ভাব্য যুদ্ধাপরাধ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। শনিবার দেশটির দক্ষিণ কর্দোফান প্রদেশের কাদুগলি শহরে জাতিসংঘের একটি ঘাঁটিতে এই হামলার ঘটনা ঘটে।

রোববার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে গুতেরেস বলেন, ‘সুদানের কাদুগলিতে জাতিসংঘের লজিস্টিকস ঘাঁটিতে ভয়াবহ ড্রোন হামলায় বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী বাহিনীর সদস্যদের হতাহত হওয়ার ঘটনায় আমি তীব্র নিন্দা জানাই।’ শনিবারের এই হামলায় ছয়জন বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী নিহত এবং আটজন আহত হয়েছেন। নিহত শান্তিরক্ষীদের পরিবারের সদস্যসহ বাংলাদেশ সরকার ও জনগণের প্রতি গভীর সমবেদনা প্রকাশ করেন জাতিসংঘ মহাসচিব।

হামলার বিষয়ে তিনি আরও বলেন, ‘জাতিসংঘ শান্তিরক্ষীদের ওপর এ ধরনের হামলা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয় এবং তা যুদ্ধাপরাধের শামিল হতে পারে। জাতিসংঘের কর্মী ও বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষা দেওয়ার বাধ্যবাধকতা সবার রয়েছে। এ ঘটনায় জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতেই হবে।’

এর আগে, শনিবার বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ডা. মুহাম্মদ ইউনূস এই হামলাকে ‘আন্তর্জাতিক শান্তি ও মানবতার বিরুদ্ধে গুরুতর অপরাধ’ হিসেবে উল্লেখ করেন। এক বিবৃতিতে তিনি এ ঘটনায় গভীর শোক ও বিস্ময় প্রকাশ করে জানান, আহত শান্তিরক্ষীদের সর্বোচ্চ চিকিৎসা ও প্রয়োজনীয় সহায়তা নিশ্চিত করতে জাতিসংঘকে জরুরি ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করা হয়েছে।

সুদানের সেনাবাহিনী ও আধাসামরিক বাহিনী র‌্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ) মধ্যে চলমান সংঘাতের মধ্যেই এই হামলার ঘটনা ঘটল। সুদানের সেনাবাহিনী এই ড্রোন হামলার জন্য আরএসএফকে দায়ী করে বলেছে, এ ঘটনা ‘বিদ্রোহী মিলিশিয়া ও তাদের মদদদাতাদের ধ্বংসাত্মক মানসিকতারই বহিঃপ্রকাশ’। তবে এ বিষয়ে আরএসএফের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

উল্লেখ্য, আবেই অঞ্চলে শান্তি রক্ষার জন্য ২০১১ সালে জাতিসংঘের অন্তর্বর্তী নিরাপত্তা বাহিনী (ইউএনআইএসএফএ) মোতায়েন করা হয়। গত মাসেই এই মিশনের মেয়াদ নবায়ন করা হয়েছে। ২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে সুদানে চলমান সংঘাতে এখন পর্যন্ত হাজার হাজার মানুষ নিহত এবং লাখ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।