ইইউ প্রধান: ইউক্রেন শান্তি চুক্তির শর্ত রাশিয়া প্রত্যাখ্যান করছে

ইউক্রেনে শান্তি প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা হুমকির মুখে পড়েছে, কারণ রাশিয়া প্রস্তাবিত শর্তগুলো প্রত্যাখ্যান করে চলেছে। আলোচনার টেবিলে সদিচ্ছার অভাব দেখানোর অভিযোগ তুলে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক প্রধান কায়া ক্যালাস এমন মন্তব্য করেছেন।

বৃহস্পতিবার ব্রাসেলসে ইইউ কাউন্সিল শীর্ষ সম্মেলনের আগে কথা বলার সময় ক্যালাস জানান, শান্তি প্রচেষ্টার জন্য ব্যাপক আন্তর্জাতিক সমর্থন রয়েছে। তবে তিনি সতর্ক করে বলেন যে, রাশিয়ার ওপর চাপ প্রয়োগের বিষয়টি এখনো একপাক্ষিক অবস্থায় রয়েছে।

তিনি বলেন, ‘আমরা রাশিয়ার পক্ষ থেকে শান্তির বিষয়ে নড়াচড়া করা বা গুরুত্বের সঙ্গে কথা বলার কোনো আগ্রহ দেখিনি। এমনকি বড়দিনের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবও প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। স্পষ্টতই, আমাদের রাশিয়ার ওপর চাপ প্রয়োগ করতে হবে যেন তারা আলোচনার ভান করা থেকে বেরিয়ে এসে সত্যিকার অর্থে আলোচনার টেবিলে বসে।’

ক্যালাস ইউক্রেনের জন্য ইইউর প্রস্তাবিত ক্ষতিপূরণ ঋণের বিষয়টিও তুলে ধরেন। আগামী দুই বছর পুনর্গঠন কাজের অর্থায়নের লক্ষ্যে এটি তৈরি করা হয়েছে। তিনি উল্লেখ করেন যে, বেলজিয়াম ও অন্যান্য সদস্য দেশগুলোর উদ্বেগের সমাধান এতে রয়েছে।

তিনি বলেন, ‘আমি আশা করি আমরা এটি চূড়ান্ত পর্যায়ে নিয়ে যেতে পারব। (রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির) পুতিন আমাদের ব্যর্থ হওয়ার অপেক্ষায় আছেন, তাই আমরা তাদের সেই সুযোগ দিতে পারি না... আমাদের ব্যর্থ হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। আমাদের দেখাতে হবে যে আমরা শক্তিশালী।’

ক্যালাস আরও যোগ করেন, ‘এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কারণ এটি রাশিয়াকে একটি শক্ত বার্তা দেয় যে, তারা আমাদের চেয়ে বেশিদিন টিকে থাকতে পারবে না... ক্ষতিপূরণ ঋণটি এই নীতির ওপর ভিত্তি করে তৈরি যে, যে ক্ষতি করেছে তাকেই এর মূল্য দিতে হবে।’

ইইউর মধ্যে রাশিয়ার প্রায় ২১০ বিলিয়ন ইউরো (২৪৬ বিলিয়ন ডলার) সম্পদ জব্দ অবস্থায় রয়েছে। ব্রাসেলস এই সম্পদের মুনাফা ইউক্রেনকে সহায়তা করার জন্য ব্যবহারের প্রস্তাব দিয়েছে। তবে এর অধিকাংশই বেলজিয়ামের আর্থিক পরিষেবা সংস্থা ইউরোক্লিয়ারের কাছে রয়েছে এবং বেলজিয়াম বারবার এ পরিকল্পনার আইনি ও আর্থিক দিক নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।

ইউক্রেনের নিরাপত্তা নিশ্চয়তা প্রসঙ্গে ক্যালাস বলেন, আলোচনা ‘সঠিক পথে’ এগোচ্ছে। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের মতো মিত্রদের কাছ থেকে সুনির্দিষ্ট নিশ্চয়তা পাওয়ার ওপর জোর দেন, যাতে ভবিষ্যতে যেকোনো হামলার বিরুদ্ধে ইউক্রেনের দীর্ঘমেয়াদী নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায়।