৯০১ বিলিয়ন ডলারের প্রতিরক্ষা বিলে সই করলেন ট্রাম্প

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ৯০১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের ন্যাশনাল ডিফেন্স অথরাইজেশন অ্যাক্ট (এনডিএএ) বা জাতীয় প্রতিরক্ষা বিলে স্বাক্ষর করেছেন। বৃহস্পতিবার স্বাক্ষরিত এই বিলের মাধ্যমে ২০২৬ সালের জন্য পেন্টাগনের নীতি ও ব্যয়ের রূপরেখা নির্ধারণ করা হয়েছে।

হোয়াইট হাউসের এক দীর্ঘ বিবৃতিতে ট্রাম্প জানান, এই আইন তার ‘পিস থ্রু স্ট্রেংথ’ বা শক্তির মাধ্যমে শান্তি এজেন্ডাকে এগিয়ে নেবে। এটি স্বদেশের নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা শিল্পকে শক্তিশালী করার পাশাপাশি সামরিক বাহিনীর যুদ্ধংদেহী মনোভাব ক্ষুণ্নকারী ‘বাজে ও উগ্র কর্মসূচি’ দূর করবে।

৩ হাজার ৮৬ পৃষ্ঠার এই বিলে ট্রাম্প প্রশাসনের চাওয়ার চেয়েও ৮ বিলিয়ন ডলার বেশি বরাদ্দ অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ইউক্রেন নিরাপত্তা সহায়তা উদ্যোগের অংশ হিসেবে আগামী দুই বছরের জন্য দেশটিকে ৮০ কোটি বা ৮০০ মিলিয়ন ডলার (প্রতি বছর ৪০০ মিলিয়ন ডলার) দেওয়ার কথা বলা হয়েছে এই বিলে। এছাড়া বাশার আল-আসাদের নেতৃত্বাধীন সাবেক সিরিয়া সরকারের ওপর আরোপিত সিজার নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের বিষয়টিও এতে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

বিলে ইসরায়েলের জন্য ৬০০ মিলিয়ন ডলার বরাদ্দ রাখা হয়েছে, যার মধ্যে আয়রন ডোমের মতো যৌথ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত। চীনের হুমকি মোকাবিলা ও ইন্দো-প্যাসিফিক মিশনের সাফল্য নিশ্চিত করার লক্ষ্যে এতে তাইওয়ান সিকিউরিটি কো-অপারেশন ইনিশিয়েটিভের জন্য ১ বিলিয়ন ডলার বাজেট রাখা হয়েছে।

পূর্ব ইউরোপে মার্কিন বাহিনীর অবস্থানের খরচ পোষাতে ন্যাটো মিত্রদের কাছ থেকে তহবিল সংগ্রহের অনুমতি দেওয়া হয়েছে প্রতিরক্ষা দপ্তরকে। রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো কীভাবে সামরিক সুবিধা বজায় রাখছে, সে বিষয়ে মার্কিন ইউরোপীয় কমান্ড (ইউকম) কমান্ডারকে বার্ষিক মূল্যায়ন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ইউরোপে মার্কিন সৈন্য সংখ্যা ৭৬ হাজারের নিচে নামানোর আগে পেন্টাগনকে যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তার ওপর এর প্রভাব যাচাই করতে বলা হয়েছে।

বিলের মূল উদ্দেশ্যগুলোকে সমর্থন জানালেও ট্রাম্প এর একাধিক ধারা নিয়ে সাংবিধানিক উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি অভিযোগ করেন, কিছু বিধান পররাষ্ট্র ও সামরিক বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান নির্দেশ করার চেষ্টা করছে। এছাড়া কংগ্রেসের কাছে স্পর্শকাতর জাতীয় নিরাপত্তা তথ্য প্রকাশ বা সেনা মোতায়েন, সামরিক সম্পদ ও নির্বাহী শাখার ব্যবস্থাপনার ওপর রাষ্ট্রপতির কর্তৃত্বে হস্তক্ষেপের বিরোধিতা করেন তিনি।

ট্রাম্প জানান, কমান্ডার ইন চিফ ও প্রধান নির্বাহী হিসেবে রাষ্ট্রপতির সাংবিধানিক ক্ষমতার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই তার প্রশাসন এসব বিধান বাস্তবায়ন করবে। এর মধ্যে পররাষ্ট্রবিষয়ক ক্ষমতা, জাতীয় নিরাপত্তা তথ্য, কর্মী নিয়োগের সিদ্ধান্ত ও কংগ্রেসের কাছে সুপারিশ করার বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত থাকবে। তিনি আরও উল্লেখ করেন, বেশ কিছু ধারা এমনভাবে ব্যাখ্যা করা হবে যাতে সামরিক মিশন পরিচালনা, পারমাণবিক সাংগঠনিক কাঠামো ব্যবস্থাপনা বা কংগ্রেসকে তথ্য জানানোর বিষয়ে রাষ্ট্রপতির ক্ষমতায় কোনো ব্যাঘাত না ঘটে।