আপনি পড়ছেন

ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহর মধ্যে নতুন করে সংঘাত এড়াতে লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর নাকুরায় শুক্রবার বৈঠকে বসেছেন ইসরায়েল, লেবানন ও যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা। ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম ইয়েদিওথ আহরোনোথ এ তথ্য জানিয়েছে।

ইসরায়েল, যুক্তরাষ্ট্র ও লেবাননের পতাকা

গত দুই সপ্তাহের মধ্যে এটি এ ধরনের দ্বিতীয় বৈঠক। ২০২৪ সালের নভেম্বর থেকে কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতি চুক্তি ইসরায়েল বারবার লঙ্ঘন করছে বলে অভিযোগের মধ্যেই এই আলোচনা অনুষ্ঠিত হলো। লিটানি নদীর দক্ষিণে হিজবুল্লাহর অস্ত্র সরিয়ে ফেলার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের বেঁধে দেওয়া সময়সীমা শেষ হওয়ার পথে থাকায় ইসরায়েলি কর্মকর্তারা সীমান্তে ফের লড়াই এড়াতে কূটনৈতিক তৎপরতা জোরদার করেছেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় ত্রিপক্ষীয় এই মনিটরিং কমিটির বৈঠকে যোগ দিতে ইসরায়েলের উপ-জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জোসেফ ড্রাজলিন নাকুরায় যান। তার সঙ্গে ছিলেন ইসরায়েলের জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের আরেক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা উরি রেসনিক। দুই সপ্তাহ আগের বৈঠকেও তিনি উপস্থিত ছিলেন। অর্থনৈতিক ও বেসামরিক বিষয় নিয়ে আলোচনায় বেসামরিক প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্ত করতে লেবানন সম্মত হওয়ার পর ইসরায়েল কমিটির এই আলোচনায় যোগ দেয়।

ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর দপ্তর এই বৈঠককে ‘লেবাননের সেনাবাহিনীর মাধ্যমে হিজবুল্লাহকে নিরস্ত্র করার লক্ষ্যে নিরাপত্তা সংলাপের ধারাবাহিকতা’ হিসেবে উল্লেখ করেছে। বিবৃতিতে বলা হয়, ‘উভয় সীমান্তের বাসিন্দাদের টেকসই নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং হিজবুল্লাহর হুমকি দূর করতে পারস্পরিক স্বার্থের ভিত্তিতে অর্থনৈতিক প্রকল্পগুলো এগিয়ে নেওয়ার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।’

ইয়েদিওথ আহরোনোথের তথ্যমতে, বেসামরিক পর্যায়ের এই সংলাপে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত লেবাননের সাবেক রাষ্ট্রদূত সাইমন করম এবং লেবাননে নিযুক্ত মার্কিন প্রতিনিধি মর্গান ওর্তাগাস। এর আগে অনুষ্ঠিত বৈঠকটিকে নেতানিয়াহু ‘ইতিবাচক পরিবেশে’ অনুষ্ঠিত বলে অভিহিত করেছিলেন। তিনি জানিয়েছিলেন, এটি ইসরায়েল ও লেবাননের মধ্যে সম্ভাব্য অর্থনৈতিক সহযোগিতার ভিত্তি স্থাপনের প্রথম প্রচেষ্টা।

গত সপ্তাহের ইসরায়েলি গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, ২০২৫ সালের শেষের মধ্যে লেবানন সরকার ও সেনাবাহিনী যদি হিজবুল্লাহর অস্ত্র সরিয়ে নিতে ব্যর্থ হয়, তবে হিজবুল্লাহর লক্ষ্যবস্তুতে বড় ধরনের হামলার প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। তবে হিজবুল্লাহ অস্ত্র সমর্পণের এই দাবি বারবার প্রত্যাখ্যান করে আসছে।

বৈরুতে মার্কিন দূতাবাসের বিবৃতি অনুযায়ী, লেবাননের সেনাবাহিনীর সক্ষমতা বৃদ্ধি ও বাস্তুচ্যুত বাসিন্দাদের ফিরিয়ে আনার বিষয়ে আলোচনার জন্য শুক্রবার নাকুরায় পাঁচ সদস্যের একটি পর্যবেক্ষণ কমিটিও বৈঠক করেছে। এই ব্যবস্থার ১৫তম বৈঠকে লেবানন, ফ্রান্স, ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক প্রতিনিধি এবং ইউনিফিলের (UNIFIL) শান্তিরক্ষীরা উপস্থিত ছিলেন।

বিবৃতিতে বলা হয়, অংশগ্রহণকারীরা সামরিক সহযোগিতা গভীর করার ওপর জোর দিয়েছেন। সবাই একমত হয়েছেন যে, ‘দক্ষিণ লিটানি সেক্টরে নিরাপত্তার জামিনদার হিসেবে একটি শক্তিশালী লেবানিজ সশস্ত্র বাহিনী সাফল্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’ বেসামরিক প্রতিনিধিরা বাসিন্দাদের নিরাপদে বাড়ি ফেরা, পুনর্গঠন এগিয়ে নেওয়া এবং অর্থনৈতিক অগ্রাধিকারগুলো মোকাবিলার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

অংশগ্রহণকারীরা নিশ্চিত করেছেন যে, নিরাপত্তা ও রাজনৈতিক অগ্রগতি দীর্ঘমেয়াদি স্থিতিশীলতার জন্য অপরিহার্য। ২০২৬ সালে নির্ধারিত পরবর্তী বৈঠকের দিকে তারা তাকিয়ে আছেন বলে জানানো হয়। উল্লেখ্য, গত আগস্টে লেবানন সরকার হিজবুল্লাহসহ সব অস্ত্র রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণে আনার পরিকল্পনা অনুমোদন করে। সেপ্টেম্বরে সেনাবাহিনী পাঁচ ধাপের একটি পরিকল্পনা গ্রহণ করে, যার প্রথম ধাপে বছর শেষ হওয়ার আগেই লিটানি নদীর দক্ষিণ থেকে হিজবুল্লাহর অস্ত্র সরিয়ে ফেলার কথা বলা হয়েছে। তবে হিজবুল্লাহর দাবি, আগে ইসরায়েলকে লেবাননের সব ভূখণ্ড থেকে সরে যেতে হবে।

গাজা যুদ্ধের মধ্যে এক বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা আন্তঃসীমান্ত হামলার পর ইসরায়েল ও লেবানন যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছায়। এতে ৪ হাজারের বেশি মানুষ নিহত এবং ১৭ হাজার মানুষ আহত হন। চুক্তি অনুযায়ী জানুয়ারিতে দক্ষিণ লেবানন থেকে ইসরায়েলি সেনাদের সরে যাওয়ার কথা থাকলেও তারা কেবল আংশিক সরেছে এবং পাঁচটি সীমান্ত চৌকিতে এখনো সামরিক উপস্থিতি বজায় রেখেছে।

গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...

খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর

Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.

Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.